আশ্বিন-কার্তিকের শহরে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এই বৃষ্টি নাকি শীত নামায়। অর্থাৎ, এসব অলকানন্দার মতো মায়াবতী বৃষ্টির হাত ধরেই প্রকৃতিতে শীতকাল আসে। আইসিইউতে থাকা মানুষটা বৃষ্টি ছুঁতে পারছে না। সে দেখতে পারছে না, কীভাবে শিশির ভেজা ঘাসের শিউলী তলা মাড়িয়ে খালি দু’টো রাঙা পায়ে দূর্গা আসে স্বর্গ থেকে। এবারও পদ্মা-মেঘনা-যমুনা কিংবা সোমেশ্বরী নদীর চর জুড়ে কাশফুল ফুটেছে। কিন্তু, তার দু’চোখে শরৎ ধরা দেয়নি। চোখ মেলে তাকালে কেবল সফেদ দেয়াল, পর্দা, ডাক্তার, নার্স, ঔষধ, যন্ত্রপাতি, রোগীদের আর্তনাদ ইত্যাদি ধরা দেয় । সলিটারী সেল এর মতো একাকীত্ব ঘিরে থাকে তাকে। লাইফ সাপোর্ট তাকে যতটা না বাঁচিয়ে রাখে, তারচেয়ে বেশি দেয় মৃত্যুসম যন্ত্রণ। সে অন্ধকারে তলিয়ে যেতে যেতে কেবল আপনজনদের খুঁজে বেড়ায়। মৃত্যুশয্যায় আপনজন পাশে না থাকলে, মুখে শেষবারের মতো জল না দিলে, মাথায় হাত না বুলিয়ে দিলে কিংবা শক্ত করে হাত ধরে রাখার মতো কেউ না থাকলে যে কতটা অসহ্য যন্ত্রণা হয়, তা কেবল আইসিইউ তে থাকা মৃত্যুপথযাত্রী মানুষেরাই জানে। একজন মানুষের কত কী বলার থাকে শেষবেলায়, সেসব বলে যেতে না পারার যে অব্যক্ত কষ্ট, তা কারো পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয়। প্রকৃতিতে কোথাও একটা চলে যাবার আয়োজন, কোথাও একটা মেনে নেয়ার প্রস্তুতি চলতে থাকে। বুকের ভেতর থেকে নিঃশব্দ আর্তনাদ বেরিয়ে আসে- আইসিইউ থেকে বলছি, শোনো..
১৯৯৫ সালের ০২ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলায় জন্ম। তিনি পিতা মোঃ ইদ্রিস আলী এবং মাতা সায়লা পারভীন এর ছোট সন্তান। শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কমপ্লিট করেছেন কলেজ অব এপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স থেকে। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিনটি- 'নিরন্তর নৈঃশব্দ্যে', 'শেষ ট্রেনে ঘরে ফিরবো না' এবং 'আমি পাল্টে নিয়েছি রিংটোন'। তিনি 'ঝরাফুল সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশন' এর সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক। ভ্রমণ, বই পড়া এবং লেখালেখি করা তার প্রিয় শখ।