আহ! কী মনোরম দৃশ্য! চারদিকে ছায়াবীথি, সুবিস্তীর্ণ প্রান্তর। সেই প্রান্তর ধরে সাইরেন বাজিয়ে চলে যায় রাতের ট্রেন। কুমারী মেয়েদের হাসির কলকাকলিতে পুরো গ্রাম একাকার। রাতের জোৎস্না আলোয় এই কুমারী পরীদের চেহারাসুরত দেখে মোহনীয় হয়ে ওঠে রাতের চাঁদ। এসব দৃশ্য যে কেউ দেখলে নিজেকে হারিয়ে ফেলে অনায়সে। মনের অজান্তে বলে ওঠে আহ! কী মায়াবী, কী মনোমুগ্ধকর এই গ্রাম। রাতের তারার ঝিকিমিকি আর জোনাকি পোকাদের মাতামাতিতে মন জুড়িয়ে যায়। হ্যাঁ, আমি বলছি সুজয়নগর গ্রামের কথা। এই গ্রামের কথা কে না জানে? শহর থেকে যখন কেউ এ গ্রামে বেড়াতে আসে তখন এর মায়াবী প্রেমে পড়ে যায়। পড়বেইবা না কেন? কুলুকুলু রবে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে হাড়িয়াভাঙা নদী। নদীর উপর বিশাল নীল ছাদ 'গগণ কুমার।' গগন কুমারকে মাথায় ধরে আছে বিশাল বিশাল বটগাছ। সেই গাছের ডালপালা এতো বিস্তৃত ও সবুজ যে, সুদূর বনবাঁদার থেকে হালকা সবুজ ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়ে পাখি এসে গাছের পাতার ফাঁকে নিজেকে লুকিয়ে গাছের সঙ্গে মিশে যায়। আর গগন কুমারের বুকে নাভীর মতো ঝুলে থাকে 'গগণ চাঁদ।' পূর্ণিমা রাতে তার মোহনীয় শীতল আলোয় গা ভেজালে শরীর হয়ে ওঠে, আকাঙ্ক্ষার জোয়ারে পূর্ণবান যুবতী নদী। সুখ শান্তিতে ভরা মনোহরা গ্রামখানি।
নেয়ামুল নাসির-এর পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট সদর থানার ষাটগম্বুজ মসজিদ সংলগ্ন ঘােড়া দীঘির উত্তর পাড়ের মগরা গ্রামে। হযরত পীর খান জাহান আলী (রাঃ)-এর বাড়ির সঙ্গে তার বাড়ি হওয়ায় সুনিপুণ স্থাপত্যশিল্প এবং নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশে তার বেড়ে ওঠা । তিনি পিতা মকবুল হােসেন এবং মাতা মনােয়ারা বেগম এর কনিষ্ঠ পুত্র, জন্ম ৯ জুন। লেখাপড়ার হাতেখড়ি নিজ গ্রামের মগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তারপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্কুলজীবন থেকে তার লেখালেখি শুরু। হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসভিত্তিক নানা প্রতিবাদী এবং সমসাময়িক বিষয়ে কবিতা লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা (সীমা), পুত্র ম্যারাডােনা নাসির এবং কন্যা ডায়না নাসিরকে নিয়ে তার একান্ত ভুবন। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১শে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মধ্যবিত্ত পাঠক মহলে সমাদৃত হয়েছে।