"৭১ এর প্রতিধ্বনি" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: স্বাধীন বাংলাদেশের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় আমাতের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। একটি জাতির অভ্যুদয়ের ইতিহাসে সর্বদাই অনেক বেদনা, আত্মত্যাগ ও কষ্টের স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। একাত্তর নিয়ে রচিত অজস্র সাহিত্যে সেই আলোচনা বা সময়ের চিত্র বারেবারে ফুটে উঠেছে। তবে সত্যি বলতে, সেই তুলনায় একাত্তরের ঝঞ্জাবিক্ষুদ্ধ সময়ে, মানুষের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা স্মৃতিচারণমূলক লেখা সংখ্যায় অতি অল্প। “৭১ এর প্রতিধ্বনি” সেই ধারার লেখায় নিঃসন্দেহে একটি মূল্যবান সংযোজন হতে যাচ্ছে। একজন ১৬ বছরের আহত কিশোরের চোখে দেখা গণমানুষের কি নিদারুণভাবে জীবনযুদ্ধের করুণ অধ্যায় হয়ে উঠে, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ কি মর্মস্পর্শী রঙে একটি দেশের অভ্যুদয়ের জন্মের গল্পকে ছবির গল্পকে তুলে আনতে পারে, এই বইটি তার প্রমাণ। লেখক পাভেজ এলাহী চৌধুরী তাঁর পরিবারের ৪ শিহীদের সাথে নিজে নির্যাতিত ও গুরুতর আহত অবস্থায় অলৈকিক ভাবে বেঁচে যাওয়া ট্র্যাজেডির যে বর্ণনা করেছেন, সেখানে ঐতিহাসিক তথ্যের বাস্তবিক উপস্থাপন এসেছে। প্রসঙ্গক্রেমে বর্ণিত হয়েছে বাঙালিদের সাহস, যুদ্ধের বেদনাময় জীবনকথা। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি পরিবারের মায়েদের হাসিমুখে সন্তানকে যুদ্ধে পাঠানোর সিদ্ধান্ত কিংবা যুদ্ধকালীন মুক্তি যোদ্ধাদের আশ্রয় ও নানা সাহায্যের ব্যবস্থা করা এবং শেষে তাঁদের বুকে ফিরে পাওয়ার আকুলতার কথা । লেখকের মায়ের যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতার যে চিত্রায়ন, তা যেন গোটা বাংলাদেশের সেই সময়ের প্রতিচ্ছবি। লেখকের ব্যক্তিগত বেদনাময় অভিজ্ঞতা, কালো হরফে ইতিহাসের দীর্ঘস্থায়ী মাইলফলকে পরিণত হয়েছে।