সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে ব্যবসা বা যেকোন কাজে আইডিয়া এবং মুনাফার একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর মানে হচ্ছে আজকের অতি-প্রতিযোগিতার কালে যেখানে প্রযুক্তিগত বহু উন্নতির কারণে অনেকেই ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়ছে, সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সৃজনশীল চিন্তা করতে পারা বা সৃজনশীল চিন্তার দক্ষতা (Creative thinking skill)। যেকেউ তার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তিত, তিনিও যেকোন দুর্বল পেশা থেকে সম্ভাবনাময় পেশাকে খুঁজে বের করতে পারেন এই সৃজনশীল চিন্তার দক্ষতার মাধ্যমে (Creative thinking skill)। যদিও এই ব্যাপারটা অনেক ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তার জন্য শুনতে ভীতিকর মনে হতে পারে, তবে আপনার জন্য তা হবে না। কারণ এ বই বেশ সংক্ষিপ্ত, সহজে পাঠযোগ্য। বইয়ের ভেতর ২১টি অধ্যায় রয়েছে। ছোট ছোট এসব অধ্যায়ে বিশ্বের বড় বড় সফল ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞ এবং উদ্যোক্তাদের ব্যবহৃত কলাকৌশল সম্পর্কে বলা হয়েছে। যা যেকোন পাঠক তার দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগিয়ে উপকৃত হতে পারে। এসব কলাকৌশল পাঠে পাঠকের মনমস্তিষ্কে সৃজনশীল অংশের টিস্যুগুলো উদ্দীপ্ত হবে, তাদের মধ্যে যেকোনো পরিবেশ-পরিস্থিতিতে সুযোগকে খুঁজে বের করার, চেনার এবং কাজে লাগানোর দক্ষতা সৃষ্টি হবে। পাঠকরা এ ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করবে, যেমন, ব্রেইনস্ট্রমিং, জিরো-বেসড থিংকিং, দলগত চিন্তা পদ্ধতি, নতুন পণ্যের নকশা করা, নতুন নতুন আইডিয়া উপস্থাপন এবং মার্কেটিং এর নতুন উপায় বের করা সহ প্রভৃতি। আপনি কীভাবে নতুন নতুন ধারণাগুলোকে পরীক্ষানিরীক্ষা করবেন সেসব পদ্ধতি সম্পর্কেও উদাহরণ সহ বলা হয়েছে। ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড প্রবলেম সলভিং বই পাঠ করে আপনি সম্ভাবনার নতুন দিশা খুঁজে পাবেন। আপনার সৃজনশীল চিন্তাভাবনার নতুন দিক উন্মোচিত হবে। আপনি যে স্বপ্ন দেখেন তা পূরণে ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড প্রবলেম সলভিং বই এক মাইলফলক হয়ে দেখা দিবে।
ব্রায়ান ট্রেসি একজন কানাডিয়ান-আমেরিকান বক্তা এবং আত্মোন্নয়নমূলক রচনা লেখক। তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' নামক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ ও বিকাশে সহযোগিতা এবং সার্বিক উন্নয়নে কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা। ব্রায়ান ট্রেসি নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মান, লক্ষ্য, কৌশল, সৃজনশীলতা এবং সাফল্য- মনোবিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনপ্রিয় এই বক্তার জন্ম কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে, তারিখটা ১৯৪৪ সালের ৫ জানুয়ারি। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা থেকে। ১৯৮৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৪০ বছরের বেশি কর্মজীবনে তিনি প্রায় ১,০০০ এরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন, এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। কানাডা, আমেরিকার বাইরেও প্রায় ৭০টি দেশে তার প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্রায়ান ট্রেসি এর বই এবং তার আলোচনার ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সারা বিশ্বের কর্পোরেট ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোক্তা তরুণদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ও বিক্রিত ' সাইকোলজি অব এচিভমেন্ট'সহ প্রায় ৫০০টিরও বেশি অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রযোজনা করেছেন, যা ২৮টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমগ্র হলো 'দ্য ২১ সাকসেস সিক্রেটস অব সেল্ফ মেইড মিলিওনিয়ারস', 'টাইম ম্যানেজমেন্ট', 'ইট দ্যাট ফ্রগ!', 'চেঞ্জ ইয়োর থিংকিং চেঞ্জ ইয়োর লাইফ', 'লিডারশিপ', 'কিস দ্যাট ফ্রগ', 'নো এক্সকিউজ : দ্য পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন' ইত্যাদি। ট্রেসির লেখা বইগুলো তার অনুপ্রেরণা জোগানো বক্তব্যগুলোর মতই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের জগতে আত্মোন্নয়নমূলক পন্থা বাতলে তরুণদের কাছে ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমূহ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।