মানবজাতিকে সঠিক পথপ্রদর্শনের ক্ষেত্রে অন্যতম কার্যকরী মাধ্যম হচ্ছে উত্তম বাণী বা কথামালা। মানুষের আচারব্যবহারকে সঠিক পন্থায় পরিচালনার পেছনে উত্তম কথামালার গভীর প্রভাব রয়েছে। এমন বহু ছোট্ট বাণী ও বাক্য রয়েছে, যা একজন অপরাধী বা গুনাহগারের জীবন পরিবর্তন ও সঠিক পথপ্রদর্শনের মাধ্যম হতে পারে। অর্থাৎ উত্তম কথার ফলাফল পাওয়া যায় তৎক্ষণাৎ। এ উত্তম কথামালা বলতে পারার কারণেই আলেমরা হলেন সৃষ্টিজগতের নববি আলোকবর্তিকা। এ দৃষ্টিকোণ থেকেই আলেমরা নবিগণের ওয়ারিশ। তারাই মানবজাতিকে হকের পথে পরিচালনা করে থাকেন, তাদের আচার-আচরণ , এবং উপদেশমালার কল্যাণেই মানুষ সঠিক পথে চলতে পারে। উত্তম কথামালা মানুষের যাপিত জীবনে এমনই প্রভাব ফেলে থাকে। এ ব্যাপারে আবু দারদা রা. বলেন, কোনো মুমিন যখন আপন সম্প্রদায়কে উপদেশ প্রদান করে, আর সে উপদেশের মাধ্যমে তারা উপকৃত হয়, তাহলে সেটাই আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় সদকা হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি উত্তম কথার আরেকটি প্রভাব রয়েছে, যা উল্লিখিত প্রভাবটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তা হচ্ছে, উত্তম বাণীসমূহ মানবাত্মা ও চিন্তা-চেতনার খোরাক হয়ে থাকে। আমাদের শারীরিক সুস্থতা ও কাজকর্ম পরিচালনার জন্য দেহের যেমন খাদ্যের প্রয়োজন হয়, একইভাবে আমাদের প্রাণশক্তি ও বুদ্ধিবিবেচনাকে সক্রিয় রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খোরাকের প্রয়োজন রয়েছে। উপদেশসমূহের বিস্তৃত জগৎ থেকে আমরা সে খাদ্যের অভাব পূরণ করে থাকি। এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের চমৎকার কিছু বক্তব্য রয়েছে, যার মাধ্যমে এ বিষয়টি আরও সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। আলি রা. বলেন, তোমরা অন্তরকে নিবিষ্ট করো এবং অন্তরের খোরাকের জন্য প্রজ্ঞাপূর্ণ মূল্যবান বাণীসমূহ তালাশ করো। কেননা আমাদের দেহের মতো অন্তরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে।