ঘড়িতে রাত তিনটা বেজে পনেরো মিনিট। এক সেকেন্ডেরও হেরফের হয়নি। ঘুম ভাঙার পরে সেই একই অনুভূতি। বেডের পাশের ল্যাম্প জ্বালিয়ে পানির গ্লাস হাতে নিব তখনই খুট করে দরজা খোলার শব্দ কানে আসল। এতো রাতে কে বাহিরে যায়? নাকি চোর আসল? শব্দের উৎস এসেছে আমার বারান্দা থেকে। এই বারান্দার চাবি একমাত্র আমার কাছেই থাকে। এইদিকে আমি ছাড়া কেউই আসেনা। তাহলে চোরই এসেছে। বালিশের নিচ থেকে স্টেইনলেস স্টিলের লাঠিটা হাতে নিলাম। বিড়ালের মতন হাঁটতে হবে। অন্ধকারে পা গুণে গুণে শোবার ঘর থেকে বের হয়ে বারান্দায় এলাম। যেটা ভেবেছিলাম সেটাই ঘটেছে। বারান্দার দরজা হা করে খোলা। তালা দরজার গ্রিলের সাথে ঝুলিয়ে রাখা। কিছু একটা দেখা যাচ্ছে তালার সাথে। বারান্দায় রাতে সবসময় অল্প পাওয়ারের লাইট জ্বালিয়ে রাখি। এখনো জ্বালানো কিন্তু এদিকের বাইরের লাইট নেভানো। ঘুমানোর আগে পর্যন্ত আমি লাইট জ্বালানো দেখেছি। এই কারণে আলো আঁধারের খেলায় তালার সাথে কী ঝুলিয়ে রাখা সেটা পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে না। এক পা বাড়িয়ে থেমে গেলাম। এখনো স্বপ্নের ঘোর কাটেনি। এখনো চোখে ঘুম লেগে আছে। মনে হলো কানের কাছে কেউ বলল, " যেও না। " সাথে সাথে কেউ একজন বলল, " যাও, দেখে আসো। তোমার জন্য কী অপেক্ষা করছে। " আমার কী করা উচিৎ, বাবা? চোখ বন্ধ করে বাবার কথা মনে করার চেষ্টা করলাম। " তুমি জানো তোমার কী করা উচিৎ! " " না " " হ্যাঁ, মামনী। " " বাবা, তুমি সবসময় আমাকে সিদ্ধান্ত কেনো নিতে বলো?" " কারণ, জীবন তোমার। " বিড়ালের মতন হাঁটতে শুরু করলাম আবার। খোলা দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লাম। গভীর অন্ধকারে ডুবে আছে। হালকা বাতাসে গাছের পাতা নড়ছে। তালার সাথে ছোট্ট সাদা ফুল ঝুলিয়ে রাখা। দুটো সবুজ পাতা আর মাঝে সাদা ফুল। এর অর্থ কী? কেনোই বা হচ্ছে আমার সাথে? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুঁজবো কোথায়?