গল্প বলা ও গল্প শোনা দুটোই আনন্দের। গল্প পড়াটাও কম আনন্দের নয়। কিন্তু গল্প পড়তে হলে চাই ভালো ভালো গল্পের বই। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদারের লেখা এ গল্পের বইটি তেমনি একটি ভালো গল্পের বই। আবদুল্লাহ মজুমদার একজন তরুণ গল্পকার হলেও তার গল্পগুলো অনবদ্ধ ও শিক্ষণীয়। মজার মজার গল্পের মধ্য দিয়েও তিনি একটি শিক্ষামূলক বা নীতিমূলক বা আর্দশের শিক্ষা দিয়ে যান। ‘ওজন চোর দোকানি’ এ বইয়ের একটি অন্যতম গল্প। অন্যকে ঠকালে, ধোকা দিলে সেটা নিজেকেও যে পেতে হয় তার প্রমাণ এ গল্পটি। এক কথায় এ গল্পটি পাঠ করে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। ‘পতাকার ফেরিওয়ালা’ এ বইয়ের নাম গল্প। এ গল্পটি জীবনজীবিকার সন্ধানে পথে পথে ঘুরে বেড়ানো একজন পতাকা বিক্রেতাকে নিয়ে। পতাকা বিক্রির বাইরেও যে পতাকার একটি ইতিহাস রয়েছে তা তাকে কিভাবে আচ্ছন্ন করে, অনুপ্রেরণা যোগায় তা খুব নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন গল্পকার। ‘কৃপণ ফজর আলী’ একটি মজার গল্প। কৃপণতার পরিণতি কি হয় তাই এ গল্পের বিষয়। শিশু-কিশোরদের পাঠ্য উপযোগীতার ওপর ভিত্তি করে এ গল্পগুলো লেখা হয়েছে। ভাষা, বাক্য, শব্দ চয়ন যতোটা সম্ভব সহজ সরল রাখা হয়েছে। এ গল্প পাঠ করে যাতে শিশু-কিশোরেরা নিজেরাই বুঝতে পারে সেভাবেই গল্পগুলো লিখেছেন গল্পকার। প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি। ফলে আমাদের মৌলকিতা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। মানবিক মূল্যবোধ ও সৃজনশীলতার চর্চা ধরে রাখতে এ গল্পগুলো মন মননে শক্তি যোগাবে নিঃসন্দেহে।
মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার (Mohammad Abdullah Mozumder) গণতান্ত্রিক, ন্যায়বিচার, মনুষত্ব সম্পন্ন ও অধিকার সচেতন সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের এক অপ্রতিরোধ্য যোদ্ধা। বিশ্বাস তার একমাত্র অবলম্বন। দুঃখকেই তিনি জীবনের চূড়ান্ত সত্য হিসেবে বিশ্বাস করেন। রক্তের সম্পর্কের বাধঁন ও কোন রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া শুধুমাত্র আত্মনির্ভরশীলতার দায়ে তিনি স্বার্থান্ধ রাজধানীতে টিকে আছেন। তার কোন রাজনৈতিক চাহিদা না থাকলেও সামাজিক বহু দায়বদ্ধতা রয়েছে। অর্থপূর্ণ জীবন ও মানুষ গড়ার শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেন বিভোর হয়ে। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার উত্তর যশপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মৌলভী মোহাম্মদ বেলাল মজুমদার আর মা জোসনা আক্তার। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার জীবনবাদী কবি হিসেবে পরিচিত। তার বিভিন্ন লেখনি ও কবিতায় বঞ্চিত মানুষের হাহাকার, বিপ্লব ও মানুষের জীবনবোধের চিত্র ফুটে উঠেছে। এছাড়াও তার শিশুতোষ লেখনি শিশুদের বাস্তব জীবনের তিক্ত সংগ্রামে অভ্যস্ত হবার প্রতি অনুপ্রাণিত করে। ইতোপূর্বে তিনি বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যম, সাপ্তাহিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও দৈনিক সংবাদপত্রে কাজ করেছেন বর্তমানে তিনি একটি বাংলা সংবাদপত্রে উপ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।