কবিতা মূলত মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ানো একটি শিল্পমাধ্যম। মুদ্রণশিল্পের উন্নতির ফলে কবিতা যাতে অবিকৃত থাকে, যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য কাগজে মুদ্রণ করে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। ফলে কবিতা আবৃত্তির থেকে কবিতা পাঠের একটা প্রচলন শুরু হয়েছে বেশ কিছুকাল ধরে। পুঁথিপাঠ, কবিগানের একসময় দুর্দান্ত প্রতাপ ছিল। এগুলো মানুষের মধ্যে প্রত্যক্ষকভাবে প্রভাব বিস্তার করত। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে এ ধারা প্রায় বিলুপ্তির পথে। বাংলা কবিতার বা কবিদের মধ্যে বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিনির্ভরতা বেড়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইট ইত্যাদি মাধ্যমে কবিতার প্রচার-প্রসার লক্ষ্যণীয়। এরই মধ্যে যৌথ কাব্যগ্রন্থ করার একটি ধারা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ঠিক কবে থেকে এ ধারার প্রবর্তন হয়েছে তা গবেষণার বিষয়। মতিউর রহমান খান ও আবু ওয়াশিদ এ সময়ের দুজন কাব্যপ্রতিভা। তাদের যৌথ কাব্যগ্রন্থের এই প্রয়াস প্রশংসনীয়। এক মলাটে দুই কবির শব্দ, আবেগ ও অনুভ‚তির যে ফ্রেম তা বাংলা কবিতার পাঠকদের আনন্দযাপনের কারণ হতে পারে। দুজন তাদের মৌলিক চিন্তা আর মূল্যেবোধের প্রাচুর্য নিয়ে হাজির হয়েছেন এ বইটিতে। ট্রেন যেমন দুটি সমান্তরাল লাইনের ওপর দিয়ে ছুটে চলে আপন গন্তব্যে, তেমনি এ দুজন কবির কাব্যের মধ্য দিয়ে পাঠককে পৌঁছে দেবে মুগ্ধতার স্টেশনে। কবিদের প্রতিযোগিতা নিজের সাথে নিজের। একটি কবিতা থেকে আরেকটি কবিতার মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়। তাই এ কবিদ্বয়ের কবিতার যে সকল দুর্বলতা, বিচ্যুতি ও অনগ্রসরতা তা তাদের আগামী চর্চার মধ্য দিয়েই উৎকর্ষের দিকে নিয়ে যাবে। পাঠক সেই সময়টুকু এ বইটির কাব্যাঙ্গের সাথে জড়িয়ে থাকুন আষ্টেপৃষ্ঠে।