বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ পৃথিবীতে আবিষ্কৃত ও স্বীকৃত প্রত্যেক ভাষারই একটি নির্দিষ্ট বর্ণমালা রয়েছে। যাতে রয়েছে কিছু অক্ষর – যা দিয়ে ঐ ভাষাটি সমৃদ্ধ। ঠিক তেমনি রসায়নের ভাষারও রয়েছে একটি নিজস্ব বর্ণমালা যা পর্যায় সারণীতে ছকাকারে প্রকাশ করা হয়। রাসায়নিক মৌলের সংকেতগুলি হলাে এটির অক্ষর, যাদের সমবায়ে গঠিত বাক্যের সংখ্যা অসীম – রাসায়নিক যৌগগুলির বিভিন্নতা অসংখ্য। বর্তমানে পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি রাসায়নিক যৌগ জানা আছে এবং প্রতি সপ্তাহে এই সংখ্যা ছ'হাজার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্যত রসায়নে এই “বাক্য গঠন” হলাে একটি বিরামহীন প্রক্রিয়া। স্বতন্ত্র অক্ষরগুলির বা মৌলগুলির সংখ্যা সীমিত ; আজ পর্যন্ত একশ নয়টি মৌল জানা আছে। রসায়নের ভাষার বর্ণমালা সংকলিত করতে কয়েক সহস্র বছর হয়তাে লেগে যাবে, কিন্তু মাত্র গত দু’শাে বছরের মধ্যে বেশিরভাগ অক্ষরের পাঠোদ্ধার করা হয়েছে। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে রসায়ন শাটি বিজ্ঞান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। স্বতন্ত্র আশিটি মৌল নানাভাবে সংযুক্ত হয়ে রাসায়নিক যৌগগুলি সৃষ্টি করে, যা দিয়ে সমস্ত জৈব ও অজৈব পদার্থগুলি গঠিত। অবশিষ্ট জানা মৌলগুলি কার্যত প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। বিজ্ঞানীগণ পারমাণবিক বিক্রিয়ার সাহায্যে কৃত্রিমভাবে এ মৌলগুলিকে প্রস্তুত করেছেন। আরাে নতুন মৌল এভাবে প্রস্তুত সম্ভব, যাদের সংখ্যা আমাদের জানা নেই। কিন্তু এটা মনে করা যায় রাসায়নিক বর্ণমালাটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এই বইয়ে আমরা আলােচনা করবাে কেমন করে রসায়নের বর্ণমালার নকশা নির্ধারিত হয়েছে এবং কেমন করে গবেষকদের অনুসন্ধিৎসু মন একটির পর একটি মৌল আবিষ্কার করেছে। কার্যত সমস্ত রাসায়নিক মৌলসমূহ সম্বন্ধে বহু বই লেখা হয়েছে যা একটি বড় লাইব্রেরির পক্ষে যথেষ্ট। রাসায়নিক মৌল সমৃদ্ধ খনিজ ও আকরিক, মৌলের নিষ্কাশন, মৌলগুলির ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম এবং ব্যবহার তাঁরা লিপিবদ্ধ করেছেন। যা সীমিত আকারে হলেও উল্লেখ করা হয়েছে। সে যাইহােক, বৃহদায়তন বইগুলিতে। মৌল সম্বন্ধে বিশদভাবে লেখা থাকলেও মৌল আবিষ্কার সম্বন্ধে খুব কম মনােযােগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এখানে চেষ্টা করেছি সেদিকটাকে স্পষ্ট করে দেখতে, কেননা প্রত্যেক মৌলের একটি “আত্মজীবনী” আছে, যা স্বীয় পথে আকর্ষণীয় বটে। অনেক মৌল আবিষ্কারের ইতিহাসটি সামগ্রিকভাবে বিচার করা হয়নি এবং একাধিক অস্পষ্ট ব্যাপারকে রসায়নের ইতিহাসবেত্তাদের সুস্পষ্ট করা উচিত। হতে পারে, আপনিও তাঁদের একজন ...।
লেখকের ভাবনা পাঠকের কাছে পৌঁছাতে না পারলে বিশাল ক্ষমতার লেখককেও সীমাবদ্ধ হয়ে যেতে হয়, গুটিয়ে যেতে হয়। কত কত সম্ভাবনাময় লেখক হারিয়ে গেছে প্রেরণার অভাবে তার হিসেব নেই। লেখকের কথা পাঠকের কাছে পৌঁছানোর সুযোগটাই এক প্রেরণা- এই ভাবনা থেকেই চিলেকোঠার যাত্রা। চিলেকোঠা প্রাথমিকভাবে ওয়েবজিন হিসেবে যাত্রা শুরু করে আগস্ট, ২০১৫ সালে। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে প্রকাশনী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম আরম্ভ করে। চিলেকোঠা পাবলিকেশনের সত্ত্বাধিকারী ইসরাত জাহান। তিনি এ প্রকাশনা সংস্থাটির প্রকাশক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। চিলেকোঠার উদ্দেশ্য, মানসম্পন্ন সাহিত্য কর্ম প্রকাশ ও প্রচারের সুযোগ তৈরি করা এবং পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে লেখকদের সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা। যাতে করে সমাজ ও দেশে তারা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেন। শুরু থেকেই তরুণদের সাহিত্যকর্মে আগ্রহী চিলেকোঠা এবং তরুণদের মানসম্পন্ন সাহিত্যকর্মকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।