সমুদ্রের মাছেরও একটা সীমানা আছে, যা অতিক্রম করে খুব বেশি দূর যায় না। কিন্তু ওয়াহিদ নাগর সীমাহীন এক জলযাত্রী। আকাশের নীল আর নীল ঢেউ ভেদ করে ছুটে চলেছেন বন্দরে বন্দরে। জলের সাথে বসবাস করেও অশ্রæজলে লিখেছেন বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে কবিতা। তাই এ কবিতাগুলো জলের মতোই প্রবহমান। বর্জ্য, মাছ, শ্যাওলা কিংবা শত শত জাহাজ নিয়ে যেমন সমুদ্র আপন চৈতন্যে মগ্ন থাকে সেইরূপ স্বভাব পেয়েছেন ওয়াহিদ নাগর। সমাজ, ধর্ম, প্রেম, বিপ্লব কত কী যে তার মনস্রোতে ভেসে থাকে তার কোনো হিসাব নেই। সেই আশির দশক, নব্বইয়ের দশক পাড়ি দেওয়া তার জীবনের নানা ঘটনা ও ভ্রমণ অভিজ্ঞাতার একটি ডায়েরি যেন এ কবিতাগুলো। এ কবিতাগুলোকে তিনি ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, বৈপ্লবিক, ধর্মীয়, রম্য ও প্রেম এই সাতটি অধ্যায়ে বিভক্ত করে সপ্তবর্ণ নামকরণ করেছেন। প্রাচ্য ও প্রাশ্চাত্য তিনি ঘুরে বেরিয়েছেন কর্মসূত্রে। ফলে তার দেখা, জানা, বোঝা অন্যদের থেকে আলাদা। কবিতাশৈলীর মান বিচারের থেকেও বিশুদ্ধ, সরল ও সুচিন্তার দিক দিয়ে এ কবিতাগুলো উত্তম পাঠ্য। প্রেমের জন্য প্রার্থনা কার কাছে করতে হবে? প্রেমিকা নাকি প্রেমিকার স্রষ্টার প্রতি? তার থেকেও প্রাথমিক যে কাজটি তা এ কবিতা দিয়েই চালিয়ে দেওয়া যায়। ওয়াহিদ নাগরের এ কবিতাগুলো অব্যর্থ, অচিন অনুভ‚তির সঞ্চয়পত্র।