বইয়ের চুম্বকাংশ : এখানে যার কথা আগে চলে আসে সে অন্য কেউ হলেও এই মুহূর্তে রুকাইয়া-র নাম বলতে হচ্ছে। বেশ রহস্যময় যার কাছে সে সর্বক্ষণ ছায়াসঙ্গী হয়ে ছিলো তাকে নিয়ে আবার আচমকা অতিমাত্রায় কৌতূহল নিয়ে বলার কি আছে? নিজ জগতের বসন্তে সে যেভাবে ভূষিত হয়েছে তাকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। আজ গভীর রাত্রে রুকাইয়া-কে স্বপ্নে না দেখলে অন্তত এই মুহূর্তে কৌতূহল হতো না। দেখি তার কাছে আবার ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করি। গতকালের মত আজও মহলে আলোকসজ্জা। মহলের পেছনের বাগিচায় এখানের মত আলো জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। নাদিম এই কেবল বাইরে এসে দেয়ায়ের সবগুলো গেট খুলে দিলো, সমুদ্র থেকে মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে। সাঁকোর উপরে এখনো ‘বিনার’ কয়েক ব্যক্তি পায়চারি করছে বোধহচ্ছে তারা কেউর অপেক্ষায়। না এখানে কোথাও রুকাইয়া নেই অন্য কোথাও দেখতে হবে। মনজির আহমদ মহলের সিঁড়ির শেষ ধাপে নেমে আসলেন। ডান হাতে থাকা ‘দ্যা পীস অভ অয়ার্লড’ ঞযব চবধপব ড়ভ ডড়ৎষফ নামের বইটি দু’হাতে সামনের দিকে ধরে দেখছেন জ্যোৎস্নায় দেখতে কেমন দেখায়। এক নজর তাকিয়ে ম্যগনোলিয়া কোবাস ফুল বৃক্ষের নিচে টেবিলের পাশে চেয়ারে বসে থাকা মেয়েটির কাছে চলে গেলেন। মৃদু হাসি ভঙ্গীতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে নরম স্বরে বললেন আর বসছেন, দেখেছ রুকাইয়া কেমন আনন্দ নিয়ে জ্যোৎস্না উঠেছে? রুকাইয়া এক নজর তার দিকে ফিরে তাকাল কিন্তু কোনো জবাব দিলা না। টেবিল ঢাকা পাতলা কাপড় সরিয়ে রাস্তায় ঝরে পড়া পুষ্পপত্রের উপর রেখে মনজির আহমদ বললেন, যদি তুমি আজ জয়ী না হতে তবে আজ জ্যোৎস্না আরো আকর্ষণীয় মনে হত! দেখো ভালোলাগার বস্তু যত ছোট হোক যত নগণ্য হোক তাকে ঐ চোখে না দেখে বিশাল মনে করতে হয়, আমি কিন্তু তা মানি। তুমি আমার ক্রীতদাসী কিন্তু ভালোলাগার অথচ আমার চাওয়া মেনে নিতে চাচ্ছ না, তুমি কি জানো না পৃথিবী মুক্তির জায়গা নয়? বিজয় হওয়ার কথা ভুলে যাও। দেখো, কোনো বস্তুর উপর কেউ যদি বারবার প্রলোভিত হয় তা যদি অতিক্রম করে হাজার বার তখন বুঝে নিতে হয় অন্তরত্মায় চিরতরে অঙ্কিত হয়ে গেছে।
বাংলা সাহিত্য চর্চার স্বপ্নযাত্রায় ২০১৯ সালে চন্দ্রমণি উপন্যাসের মাধ্যমে তার আত্মপ্রকাশ। আকাশের মতো সীমাহীন জীবন না হলেও তার গল্পের জগৎ নিয়ে বুকের ভেতর অসীম বিচরণ। জন্ম : ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮, বাগেরহাট জেলার বানিয়াখালি গ্রামে। গল্পের সঙ্গে বসত করতে গিয়ে সৃষ্টি করেছেন জুনু নামে অদ্ভুত একটি চরিত্র। জুনুর সঙ্গে ছায়াসঙ্গী হয়ে পথ চলতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছেন মানব জীবনের বিচিত্র গল্প। মানব জীবনের গল্প কেবলই গল্প নয়, কখনো কখনো রূপকথা হয়ে যায়। তবুও সে বিষয়গুলো সত্য আবার কখনো মিথ্যা। চন্দ্রমণি উপন্যাসের মতো লিখেছেন- দৃষ্টিদীঘল, তোমার জীবন পরশ। বাংলা সাহিত্য চর্চার স্বপ্নযাত্রায় লিখে চলেছেন অবিরাম।