বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যতম জেলা ফেনী। ১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে যে-সকল মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয়েছিল ফেনী তার একটি। পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার মহকুমা ছিল। ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। এক সময়ে ফেনীর অধিকাংশ মানুষের পেশা ছিল কৃষি। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এখানকার মানুষ অবদান রেখে চলেছেন। বেছে নিচ্ছেন সম্মানজনক এবং বৈচিত্র্যময় নানান পেশা। নেতৃত্বও দিচ্ছেন বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য অঙ্গনে। ফেনী জেলার যোগাযোগের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী সড়ক। এছাড়া এ জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে। ২০০০ থেকে ২০০৬ সালে কেমন ছিল ফেনীর চিত্র? এর কিছুটা উত্তর জানা যাবে শফিক সাইফুলের ‘ফিরে দেখা ফেনী আমার সাংবাদিকতা’ বইটিতে। সাংবাদিকতার সূত্রে শফিক সাইফুল তখন ফেনীসহ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়েছেন। লেখচিত্রে তুলে ধরেছেন এসব অঞ্চলের চালচিত্র। সেসব শানিত প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। কারো কারো কাছে তিনি হয়েছেন বিরাগভাজনও। এসব প্রতিবেদনে উল্লিখিত সমস্যাগুলোর কিছু সমাধানও হয়েছে। কোনো দল, মত বা ব্যক্তিপক্ষে না থেকে একজন সাংবাদিকের যে ভূমিকা রাখা উচিত, তিনি সেই ভূমিকাই পালন করেছেন সৎসাহস নিয়ে। এ সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত শফিক সাইফুলের লেখা উল্লেখযোগ্য ১৬টি প্রতিবেদন এ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। সমাজ পরিবর্তনের দায় সাংবাদিক বা লেখকের একার নয়। বইটির প্রতিটি প্রতিবেদন মূল্যায়ন করলে শুধু ফেনী জেলাকে নয়- তৎকালীন বাংলাদেশের প্রতিটি জেলার চিত্রই খুঁজে পাওয়া যাবে।
শফিক সাইফুল ১ জুন ১৯৮২ সালে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন ও মাতা মানকিরেন নিসা। ১৯৯৭ সাল থেকে লেখালেখি শুরু করেন তিনি। সাংবাদিকতা করে লেখার হাত পাকিয়েছেন । সাংবাদিকতার কাজটিও শুরু করেছেন ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি)থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে। তিনি ‘বাংলাদেশের কবি ও কবিতা’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করতে গিযে যে অনেক শ্রম, সময় ও মস্তিষ্ক ক্ষয় করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রবীণ থেকে শুরু করে তরুণতম কবি পর্যন্ত স্থান দিয়েছেন নিঃসঙ্কোচে। তারপরও কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে যা ভূমিকাতে অর্থাৎ তাঁর কৈফিয়ত-এ অকপটে স্বীকার করেছেন। দশক বিভাজন করতে কারো নাম হয়ত বাদ পড়েছে, কারো নাম হয়ত পরবর্তী দশকে লেখা হয়েছে। তবুও এত সংখ্যক কবির সমাহার একত্রে উপস্থাপন করার দুঃসাহস একটি অনবদ্য প্রয়াস। গ্রন্থটি কবিমহল-সুধিমহল তো বটেই, সাধারণ পাঠকের কাছেও গ্রহণীয় হবে সন্দেহ নেই। বর্তমানে শফিক সাইফুল প্রকাশনা ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। প্রকাশনা সংস্থা ‘সাহিত্যদেশ’-এর কর্ণধার তিনি। সবকিছু মিলিয়ে সাহিত্যকর্ম ছাড়া তাঁর চিন্তা-চেতনায় অন্য কোনো বিষয় রেখাপাত করে না। তাঁর এই মহৎ কর্ম বিস্তৃত হোক অনন্ত পরিধিব্যাপী, সমাদৃত হোক অনন্তকাল।