অসম্ভব সাহসী ও অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজী “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের” রণাঙ্গণ থেকে গণমাধ্যমের অন্তর্নিহিত অনেক বিষয়েই তার অভিজ্ঞতার ঝুড়ি প্রসারিত হয়- সন্দেহাতীতভাবে। সে সব অভিজ্ঞতালব্ধ কালজয়ী ঘটনাবলী অত্যন্ত সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন তার-এ গ্রন্থে। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পেয়েছে নিজেদের জাতিসত্তা, আপন পরিচয়। এর পেছনে এ দেশের ছাত্র-যুবক-কৃষক-শ্রমিক সকলেরই অংশগ্রহণ ছিল। লেখক এ গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন এবং পরবর্তী সময়ের ঘটনার উদ্ভব এবং পরিণতির যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা, যুদ্ধ এবং সমাজ ভাবনার সঙ্গে চিন্তাশীল তরুণ সমাজের আকাক্সক্ষার রূপচিত্র- এমন সমস্ত বিষয়বস্তুকে একসঙ্গে গ্রথিত করেছেন অত্যন্ত সহজ সরল ভঙ্গিতে। লেখক তাঁর নিজ মনোবেদনার কথা যেমন তুলে ধরেছেন- তেমনি সুবিধাবাদীদের নজিরবিহীন যথেচ্ছারের কথাও তুলে এনেছেন। তবে ইতিহাশ্রয়ী অন্য লেখকদের তুলনায় এ গ্রন্থের লেখক কাউকে আঘাত দেওয়া বা বিদ্রুপাত্মক বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেননি। নিজের নিঃñিদ্র প্রত্যয়ের কথা বলেছেন, যুদ্ধকালীন সময়ের ও পূর্বাপর অনেক সাহসী এবং ভীরু প্রকৃতির অনেকের কর্মকা-- কিভাবে এ যুদ্ধকে এগিয়ে নেওয়া বা ষড়যন্ত্রের জালবোনা; সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা চাকুরিজীবীদের বয়সসীমা ও হাইকোর্টের রায়সহ বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি নিঃসংকোচে।