বাংলাদেশের আশিক রহমান খুব ভালোবাসত আমাকে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমি আশিক রহমানকেই দেখেছিলাম, কেমন অন্যরকমভাবে প্রেমের দৃষ্টি নিয়ে তাকাত আমার দিকে। ও ছিল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ওখানকার স্থানীয়ই। আমাদের বন্ধুত্বও হয়েছিল কিন্তু অল্প কয়েকদিনে ও আমাকে প্রেমের প্রস্তাব করে বসল। আমি ওকে পছন্দ করতাম তবে তা ছিল একজন সাধারণ বন্ধুর মতন। আশিক রহমান ছিল আমার চেয়ে অন্তত চার ইঞ্চি খাটো। বাংলাদেশের ছেলেরা গড়পড়তা যেমন উচ্চতার হয় ঠিক তেমনই। তবে আমরা আফগানি পশতুনরা বরাবরই বাংলাদেশি ছেলেদের থেকে উচ্চতায় বেশি ছিলাম। আমি সবসময় চাইতাম, একজন লম্বা আর সুদর্শন ছেলেকে ভালোবাসতে। আমি আশিক রহমানকে বলতাম- তুমি হয়ত জানোনা, আমার জীবনটা কুড়ি বছর পার হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে। জীবনটা পাক খেতে খেতে দীর্ঘায়িত করে এই পর্যন্ত এসছি। মনে করো আধো অন্ধকারে এঁকেবেঁকে চলা কোথাও না পৌঁছানো মানুষের মত আমার জীবন। আমার বাবা নেই, দেশে পরমাত্মীয় বলতে আমার মা আর দাদু। আমি ঠিক জানিনা, দাদু কখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে। তবে আমি আমার মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাই। আশিক রহমান আমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পাগলামি শুরু করল।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার বিঘাই গ্রামে ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় ব্যাংকার। বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখেছেন অসংখ্য গল্প। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ তিনটি। বাজপাখির পুনর্জন্ম-২০১৭, সিএস খতিয়ান ও একটি মামলার ইতিবৃত্ত-২০১৯ এবং বেড়ালের কোয়ারেন্টাইন-২০২২।