ফ্ল্যাপ কুলসুম আক্তার সুমী জোছনার জলছাপ আটলান্টিকের নীলজল যাঁর চোখে কবিতার নীলপদ্ম ফুটায়। স্টাচু অব লিবার্টির পা ছুঁয়ে উর্মিমালা নিত্য যাঁর ভাবনাকে দোলা দিয়ে যায়। যিনি হাজার মাইল দূরে বসেও মায়ের ভাষাকে সেবা করে যান অবলীলায়। উপরন্ত মাতৃভাষায় কবিতার ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করেন দেশপ্রেমের অনুপম নিসর্গে। তিনি "জোছনার জলছাপ"- এর প্রবাসী কবি কুলসুম আক্তার সুমী। এটা কবি'র দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। কবি গদ্যছন্দের এক কুশলী কাব্যকার। রোমান্টিক ঘরাণার আজস্র পঙক্তির স্রষ্টা কবি কুলসুম আক্তার সুমী। তাই সাহসের ডানায় ভর করে লিখতে পারেন-- 'তবু এই ঢের, সুর্যাস্তের কালে দেখা হলো তোমাতে আমাতে তোমার হাত ধরেছি... পৃথিবী পর হয়ে যাক পরোয়া করি না।' কবি কুলসুম আক্তার সুমী এক জাদুকরী কলমের অবিনাশী কারিগর। আসাধারণ মনলোভা আর বাণীপ্রধান তাঁর কবিতা। তাঁর জাদুকরি কলমে তিনি এলোমেলো করে দিতে পারেন পাঠক হৃদয়। কবি'র কবিতা পড়লে দেখা যায় সুদূর আমিরিকায় বসে সাহিত্য সাধনা করলেও তাঁর কবিতার নাড়িপোতা তারই সবুজ শ্যামল জন্ম জমিনে এই বাংলাদেশে। তাই তাঁর প্রায় সব কবিতা স্বদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং মাতৃভূমির প্রাধান্যে সমুজ্জ্বল। কবি কুলসুম আক্তার সুমী'র কবিতার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য গতিময়তা যা ভাবনার বর্ণিল রঙে রাঙা। শব্দ ব্যবহারের দক্ষতা তাঁর কবিতাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে। তিনি একজন আধুনিক কবি'র প্রতিমূর্তি। শুধু রোমান্টিকতা নয় ট্রাজেডির অতলান্ত কবি মানসে ধারণ করে বিরহের তিক্তফল চিবুতে চিবুতে তিনি হাজার বছর হেঁটে চলেন অন্য দেশের সোডিয়াম শহরে। তাঁর কবিতা অনেক বেশী তীক্ষ্ণ । অনেক বেশী শানিত তাঁর প্রকাশভঙ্গি। সাথে সাথে অনেক সুষমা মন্ডিত ভাবনার অবিনাশি কথামালা। আটলান্টিকের পাড়ে বসে কবি যে সাধনা করছেন তা একদিন পালতুলে দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেবে কোনো এক স্বপ্নের সোনালি বন্দরের। আমার বিশ্বাস একদিন বাংলা কবিতায় কবি জিতে নেবেন পাঠকের কাঙ্খিত ভালোবাসা। কবি'র কবিতা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কবি'র জন্য শুভ কামনা। মাহবুব খান কবি উপন্যাসিক প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অনুশীলন সাহিত্য পরিষদ।
কুলসুম আক্তার সুমী একজন উদীয়মান কবি, লেখক, গল্পকার ও কলামিস্ট। কুলসুম আক্তার সুমী ১৯৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর কুমিল্লার লাকসাম থানার উত্তরদা ইউনিয়নের কান্দির পাড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আবুল হাসেম ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর)-এর সুবেদার হিসেবে তিনি সাত নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন। মা ফাতেমা বেগম গৃহিনী। উত্তরদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তার শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম সেনানিবাস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি এইচএসসি তে চট্টগাম রোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১৫তম স্থান লাভ করেন। ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দীর্ঘদিন তিনি প্রথম আলো, আজকের কাগজ, বাংলাদেশের একমাত্র ফিচার এজেন্সি 'নিউজ নেটওয়ার্ক' ও বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ওয়েবপোর্টাল বাংলাদেশ ইনফো ডট কমে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। সেখানে একটি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। প্রচারবিমুখ কবি ছোটবেলা থেকেই মনের আনন্দে লেখালেখি করতেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশনায় তার লেখা প্রকাশিত হয়। তিনি গবেষণাধর্মী কাজের সাথেও যুক্ত ছিলেন। নিউজ নেটওয়ার্ক এর সম্পাদনায় 'অভিন্ন পারিবারিক আইন' বিষয়ে তাঁর যৌথ প্রকাশনা রয়েছে। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত 'সাপ্তাহিক বাংলাদেশ' পত্রিকায় বেশ কয়েকবছর সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে তাঁর কলাম প্রকাশিত হয়। কবি ও সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন সম্পাদিত 'শিরি সে এক মা' গ্রন্থে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিগত জীবনে কবি দুই সন্তানের জননী। বর্তমানে তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বসবাস করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: একক কাব্যগ্রন্থ: শব্দের ইচ্ছেঘুড়ি (২০২১) সম্মিলিত: প্রতিফলিত রোদ্দুর (২০২১)