পাখিরোষ’-এ নবত্ব আছে, আছে মৌন দ্রোহ, যা যেকোনো সময়ে হতে পারে মুক্তির কাঙ্ক্ষিত আরক। জীবনের আড়ালে থাকা অভিজ্ঞতা হলো গল্প। ‘পাখিরোষ’ সেই না বলা কথার মুখপাত্র। একটা লেখাকে পাঠ্য করে তুলতে না পারলে পাঠক কেন সেটাকে পথ্য হিসেবে গ্রহণ করবেন? কাজটা কী সহজ? মোটেও না। লেখক হিসেবে আশরাফ জুয়েলের অর্জিত অভিজ্ঞতাকে বিশ্বাসযোগ্যতায় রূপান্তরের প্রচেষ্টা ‘পাখিরোষ’–এর গল্পগুলো। ‘ছায়াসন্দেহ’ গল্পে বাস্তবতা আমাদের যাপনের লোকমা হিসেবে আমাদের খাদ্যনালিতে আটকে যাওয়া দলা হয়ে পীড়া দেয়। ‘সুখনিদ্রা পরিত্যাজে, জাগো মৃগরাজে’ আমরা খুঁজে পাব বাংলা সাহিত্যের এমন বিরলপ্রজ এক লেখকের একাকীত্বের বয়ান, যা পাঠককে ঠেলে দেবে নিসম অন্ধকারে। ‘একটি নোংরামূল্যের গল্প’-তে এমন এক জীবনের কথা উঠে এসেছে, যা পাঠে হয়তো পাঠকের ঘৃণাবোধ জন্মাতে পারে, কিন্তু এগুলো তো ঘটছে। ‘গর্ভনাশ’-এ এমন কিছু ঘটে, যা আমাদের কল্পনাতেও আসে না। ‘ঘন বাতাসের সুলেখা’, ‘এতো নিশ্চিন্ত হইয়া মানুষ নিজের মৃত্যুরে খায় ক্যামনে’, ‘অপ্রকাশিত ভাবনার কাফকা’ গল্পগুলোয় পাঠক নিজেকে ভিন্ন ভিন্ন রূপে খুঁজে পাবেন—একথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। ‘বিজ্ঞাপিত সুখ’, ‘পাখিরোষ’, ‘হত্যাখামার’ গল্পগুলো আপনার ভাবনা–স্তরে এক অনায্য অনুরণন তৈরি করবেই। যেভাবে লেখকের ‘রাষ্ট্রধারণার বিরুদ্ধে মামলা ও বিবিধ গল্প’ গ্রন্থটিকে গ্রহণ করেছিলেন পাঠক, ঠিক সেভাবেই গ্রহণ করবেন ‘পাখিরোষ’কে।
আশরাফ জুয়েল। জন্ম ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৭ সাল, মহারাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বাংলাদেশ। চিকিতসাবিজ্ঞানে স্নাতোকত্তোর করে বর্তমানে বি আর বি হাসপাতাল লিমিটেডের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বা ইনটেনসিভ কেয়ার ও ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যাণ্ট হিসেবে দায়িত্বরত। এর বাইরে লেখালেখিই একমাত্র নেশা। ব্যক্তি জীবনে দুই সন্তানের জনক। সহধর্মিণী ডাঃ রওশন আরা খানম ইউনাইটেড হসপিটালের বক্ষব্যধী বিশেষজ্ঞ। প্রকাশিত গ্রন্থ- চারটি। প্রথম গল্পগ্রন্থ “রাষ্ট্রধারণার বিরুদ্ধে মামলা ও বিবিধ গল্প’ জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত এবং পাঠক ও সমালোচক মহলে সমাদৃত৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে পেয়েছেন ‘ইতিকথা মৈত্রী সাহিত্য সম্মাননা ২০১৭’। 'পূর্বপশ্চিম সাহিত্য পত্রিকা'র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।