আমিনুল ইসলাম ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলের মালিক। পাঁচ তারকা হোটেল হলেও তাঁর হোটেলটি প্রায় সারাবছরই ফাঁকা থাকে। মানুষজন তেমন একটা আসেই না বললে চলে। এতো বড়ো একটি পাঁচ তারকা হোটেল চালাতে আমিনুল ইসলামের অনেক টাকার প্রয়োজন। তা নাহলে হোটেল বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না তিনি। আমিনুল ইসলাম তাঁর পাঁচ তারকা হোটেলটিকে টিকিয়ে রাখতে চান। যার জন্য তিনি ঢাকার বাইরে যোগাযোগটা বাড়িয়ে দেন। সেই যোগাযোগের প্রেক্ষিতে তাঁর সাথে সম্পর্ক হয় জামিল সাহেবের। আমিনুল ইসলাম জামিল সাহেবকে বড়ো অঙ্কের অর্থের প্রস্তাব দেন। জামিল সাহেবও কোনো ভাবনাচিন্তা ছাড়াই সম্মতি দিয়ে দেন। জামিল সাহেব ভালো কোনো কাজের কথা বলে গ্রামের সহজসরল নারীদের ঢাকায় নিয়ে আসেন। আমিনুল ইসলামের পাঁচ তারকা হোটেলে শুরু হয় রমরমা রঙিন ব্যাবসা। আমিনুল ইসলামকে তাকাতে হয় না আর পেছন ফিরে। বড়ো অঙ্কের অর্থ পেয়ে খুশী জামিল সাহেবও। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই খুন হোন আমিনুল ইসলাম। হোটেলে তাঁর নিজ কক্ষেই আমিনুল ইসলামের লাশ পাওয়া যায়। সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁর প্রকৃত খুনিকে বের করতে ব্যর্থ হয় এমনকি তিনি কি করে খুন হয়েছেন তাও অজানা হতে শুরু করে! আশ্চর্যজনক এই মৃত্যুর রহস্যে ডুবে যেতে থাকে আমিনুল ইসলামের পাঁচ তারকা হোটেল, থেমে যায় রমরমা রঙিন ব্যাবসাও।
আরিফ খন্দকার। বুকের ভেতর অজস্র গল্প বয়ে বেড়ান। মানুষের গল্প, জীবনের গল্প। সেইসব গল্পই তিনি বলে যেতে চান কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে। তাইতো একের পর এক লিখে চলছেন। আমৃত্যু লিখে যেতে চান। তাঁর লেখা যখন বই আকারে প্রকাশ হয় তখন তাঁর কাছে মনে হয় এটা একটা বই-ই না। আসলে এটা একটা মানুষ, এটা একটা জীবন। এভাবেই তিনি মানুষ, জীবন তৈরি করে চলছেন ২০১৫ সাল থেকে। ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশ হয় তাঁর প্রথম বই। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৬। দুটো কাব্যগ্রন্থ ও চৌদ্দটি উপন্যাস। তাঁর কাছে এই ষোলোটিকে বই মনে হয় না। মনে হয় মানুষ, মনে হয় জীবন। এই ষোলোজন মানুষ পাঠকের দুয়ারে ঘুরে ঘুরে তারা তাদের জীবনের গল্প শুনায়। এভাবে আরো মানুষ তৈরি করায় ব্যস্ত তিনি শুধুমাত্র তাদের জীবনের গল্প পাঠকরা শুনবে বলে। মানুষ ও জীবন তৈরি করার এই মানুষটির জন্ম ২৩ আগস্ট ১৯৯৭ সালে নরসিংদী শহরে। খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর বই পড়া শুরু। বই পড়তে পড়তে যখন তাঁর মনে হলো তাঁর ভেতর নদীর জলের মতো তিরতির করে গল্প বয়ে বড়াতে শুরু করছে তখনই তিনি লিখতে শুরু করেন। শুরুটা ছোটগল্প দিয়ে হলেও কবিতা ও উপন্যাস লিখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাঁর কাছে মনে হয় কবিতা ও উপন্যাসে মানুষের জীবন যতটা গভীরভাবে অনুধাবন করা যায় ততটা গভীরভাবে আর কোনোকিছুতে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। কারণ কবিতা ও উপন্যাসই মানুষের কথা বলে, জীবনের কথা বলে। বলতে বলতে আবার মানুষ হয়, জীবনও হয়। এই মানুষ আর এই জীবন দেখতেই খুব পছন্দ করেন তিনি। তাইতো সবকিছু থাকা সত্ত্বেও একা, নিঃসঙ্গ হয়ে আছেন লেখা নিয়ে। অবশ্য এটাকে একা, নিঃসঙ্গও বলা যায় না, বলা যায় তিনি মানুষের ভিড়ে জীবনের গল্প বলায় ব্যস্ত।