ভূমিকা একদিন এক ফোন পাই। কিছু বখাটে এক স্কুলছাত্রীকে ইভটিজিং করছে। সাথে সাথেই ফোর্স পাঠাই। আটক করা হয় ইভটিজারদের। কিন্তু যখন থানায় আনা হয় আমি তো তাদের দেখে থ! ওরা সবাই স্কুলছাত্র। কেউ অষ্টম, কেউ নবম, কেউবা দশম। তাদের কাছে জানতে চাইলাম, ‘ইভটিজিং কেন করছিলে?’ তারা উত্তর দিল, ‘উত্যক্ত করলে ইভটিজিং হয় সেটা তো জানি না। আর আমরা বন্ধুরা মিলে তো মজা করছিলাম।’ ঠিক এরকম আরও অনেক অপরাধ আছে যা না জেনেই সবাই করে ফেলে। আবার এমন কিছু অপরাধ আছে যা মানুষ অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করে না! কিন্তু করার পর কিংবা ধরা পড়ার পর হুঁশ ফেরে। এসব মানুষের জন্যই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ‘হ্যালো পুলিশ স্টেশন’। ৪০টি বাস্তব ঘটনার আলোকে এই বইয়ে আইনের খুঁটিনাটি উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। এক কথায় এটি একটি আইনের বই। আইনের কঠিন কঠিন ধারা উল্লেখের পরিবর্তে আমার পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা ও সত্য ঘটনার আলোকে এই বই লেখা হয়েছে। আইন জটিল ও কঠিন বিষয় হলেও এখানে এমন সহজ ও প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরা হয়েছে যেন স্কুলশিক্ষার্থীসহ প্রত্যেক শ্রেণি পেশার মানুষই সহজেই প্রতিটি বিষয় বুঝতে পারেন। এই বইয়ের প্রতিটি ঘটনা থানাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও এই বইয়ের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য- মানুষকে যেন কখনও থানায় যেতে না হয়!br এই বইয়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আইনগত সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। মোহাম্মদ মহসীন পিপিএম (বার) চুয়াডাঙ্গা।
মোহাম্মদ মহসীন পিপিএম (বার) গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতি নদীর তীরে গোবরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আলহাজ্ব আরোজ আলী ও মাতা মনোয়ারা বেগমের তত্ত্বাবধানে শিক্ষারম্ভ হয়। গোপালগঞ্জ শহরের নবীনবাগে বেড়ে ওঠা, পঠনপাঠন। স্বর্ণকলি স্কুল থেকে যাত্রা শুরু, তারপর গোপালগঞ্জ এস এম মডেল থেকে এসএসসি আর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে ডিগ্রি। মাস্টার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যার জনক। মোহাম্মদ মহসীন লিখতে ভালোবাসেন। ব্যক্তিগত আবেগ, অনুভূতি এবং পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা তার লেখার মূল উপজীব্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ই তার লেখালেখির মূল প্লাটফর্ম। তার প্রথম প্রকাশিত বই ‘হ্যালো পুলিশ স্টেশন’। পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে আত্মসচেতনমূলক এই বই। ‘আত্মহত্যার আত্মকথা’ এই প্লাটফর্মে তার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। সফল পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন। কর্মক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি দুইবার প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) পদকে ভূষিত হন। Promotion of Gender Sensitivity ক্যাটাগরিতে ‘উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’ পদক পান ২০১৯ সালে। এছাড়া ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ‘আইজি ব্যাজ’ পান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাট ডিপার্টমেন্টের সম্মানজনক ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রাম (আইভিএলপি) এর একজন এলামনাই। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ‘হ্যালো ওসি’ নামে কার্যক্রম গ্রহণ করে ব্যাপক আলোচিত হন। এছাড়াও বাল্যবিবাহ রোধ, মানবিক বিভিন্ন কার্যক্রম এবং ইস্যুভিত্তিক উদ্ভাবনী কার্যক্রমের জন্য তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামসময়িক আইনগত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেও তিনি প্রশংসিত।