অনন্যা দেবী মিতালীকে জাগাতে গিয়ে দেখলেন দুজনেই ঘুমিয়ে পড়েছে। রাগান্বিত হয়ে ডাকাডাকি শুরু করলেন। কিন্তু কমল বাবু বাঁধা দিয়ে বললেন, থাক থাক ওদের ডেকে ঘুম ভাঙিও না। রেজাল্ট হয়েছে। কেবল মাত্র বছরের প্রথম। অনেক সময় আছে লেখাপড়া করার। একটু বিশ্রাম নিতে দাও অনন্যা। অন্যন্যা দেবী আর ডাকাডাকি না করে কি যেন কাজে রান্না ঘরে ঢুকে কান্তাকে চুলার পাড়ে যেতে বললেন। উত্তর-পশ্চিম কোণে ঘন কালো মেঘের ঘূর্ণি ঝড়ের দশ নম্বর সংকেতটা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। ভ্যাপসা গরম হাওয়াটা এখন অনেকটা শিতল হাওয়ায় পরিণত হচ্ছে। মৃদু বাতাসে বয়ে আনছে বসন্তের সৌরভ। কোকিলের কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে মধুর সুরে বসন্তের গান। কাননে কাননে ফুটছে গোলাপ কলি। ছুটে আসে নীল ভোমরা। গুন গুন করে গাই ভালোবাসার গান। মিলনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনে স্বপ্নপুরীর অট্রালিকায় অবস্থানরত দরিদ্র রাজকুমার সাথে এ রাজ্যের রাজকুমারী। এখন মিতালী আর একা যায় না স্কুলে। সঙ্গে থাকে সুমন। সমান্তরাল রেল লাইনে চলে দুটি গাড়ি। দেখা হয় চলার পথে। আপডাউন হয় মাঝে মাঝে। প্রশ্ন হয় উত্তর হয় না। আবার কখনো উত্তর আসে প্রশ্ন হয় না। চলছে ট্রেন আপন গতিতে। তবে চলার গতি দেখে বুঝা যায় গৌন্তব্যে পৌঁছতে সামান্য দেরী হলেও সময় কিন্তু ঘনিয়ে আসছে। মিতালীকে কমল বাবু তিনজন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ান। ইংরেজি পড়ান জহুরুল স্যার, পাটি গণিত রজিব বিএসসি এবং ইলেকট্রিভ ম্যাথ পড়ে ছামিউল এমসি‘র কাছে।