সেদিন ছিল শুক্রবার। সাধারণত ছুটির দিনে উদয় রহমান চেম্বারে বসে না। কিন্তু সেদিন জরুরি একটি মামলার কাজে বসতে হলো। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে পত্রিকা হাতে নিলো। হঠাৎ পত্রিকার একটি শিরোনামে চোখ আটকে গেল তার। সেখানে লেখা ছিল, ‘ভুল মেডিসিনের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ডাক্তার রোদেলা।’ পত্রিকার শিরোনামে থমকে গেল উদয়। প্রিয় বান্ধবী খুনের আসামি! অ্যাডভোকেট উদয় অপলক দৃষ্টিতে খবরের শিরোনামে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। চেনা মুখখানা কতটা অচেনা। রোদেলার ছবির দিকে থাকিয়ে মনে পড়ে গেল অনেকদিন আগে বলা ওর কিছু কথা, ‘আচ্ছা উদয়, কখনো যদি আমি আইনি জটিলতায় আটকে যাই, তখন তুমি কী করবে?’ উদয়ের উত্তর ছিল, ‘নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে সেই জটিলতা থেকে তোমায় বের করে আনব।’ সময়ের পালাবদলে দশটা বছর কেটে গেছে। দশ বছরে কত শত রাত নির্ঘুম কেটেছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। রোদেলার সেই কথা উদয়ের এবার প্রমাণ করার পালা। কারাগারে আসামি কক্ষে উদয় ও রোদেলার আবার দেখা৷ শেষবার দেখা এবং এখন দেখার মাঝে কেটে গেছে দশটা বছর। সময় কত দ্রুত চলে যায়। চলে যাওয়ার সাথে কিছু স্মৃতি রেখে যায়। যা ধারণ করে বহুবছর কাটিয়ে দেওয়া যায়। সময়ের পরিক্রমায় দেহে বয়সের ছাপ পড়েছে, লম্বা চুলগুলো ছোটো হতে হতে কাঁধে নেমে এসেছে। চঞ্চল চোখ দুটি অসহায় হয়ে পড়েছে। কারাগারে আসামির সাথে আইনজীবীর কথোপকথনের সময়, কিন্তু নিরবতায় কেটে যাচ্ছে। কী বলবে উদয়! কীভাবে শুরু করবে? প্রিয় মানুষটি যে আজ শিকলে বন্দি। এটা হওয়ার কথা ছিল? এভাবে দেখা না হলেও পারতো৷ কী হয়েছিল উদয় রোদেলার জীবনে? দীর্ঘ দশটি বছর পর তাদের দেখা কারাগারের আসামি কক্ষে কেন? গল্পের রহস্য লুকিয়ে আছে শহরতলির ভিড়ে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গল্প পড়ে।
শীত পড়তে শুরু করেছে, হালকা কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ। রাতের আকাশে নিভুনিভু করে জ্বলছে একটি তারা। বাড়িতে তখন উৎসবমুখর পরিবেশ। নতুন অতিথির আগমন। জন্ম মফস্বল এক জেলা সুনামগঞ্জে। ছোটো অতিথির আগমন। আস্তে আস্তে বেড়ে উঠা। বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেই যে ছুটা শুরু হয়েছিল, এখনো ছুটছে জ্ঞানার্জনের জন্য। স্কুলে একবার রক্ত পরীক্ষা করা হয়, সে বারই জানতে পারেন নিজের রক্তের গ্রুপ এশিয়ার সবচেয়ে কমন গ্রুপ ‘ও পজিটিভ’। শখ বলতে বুঝতো বই পড়া, সেই পড়ার নেশা থেকেই নতুন শখের জন্ম, সেটা হলো- লেখালিখি করা। বয়স সবে কুঁড়ি পার হয়েছে, এরই মধ্যে অনেক পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। গল্প তার কাছে জীবনের উৎস, লেখালিখি করা তার নেশা। সৃষ্টি করতে চান অসংখ্য জীবনের গল্প, ভবঘুরের গল্প, কখনো আবার ফুটিয়ে তুলতে চান একজন যাযাবরের গল্পও। গল্পকার কিংবা লেখক পরিচয়ের পাশে যোগ করতে চান আরও পরিচয়। সকল পরিচয়ের ঊর্ধ্বে যে লোকে বলে উঠবেন, ‘সাকিব হাসান রুয়েল একজন ভালো মানুষ।’ ‘শ্রাবণ সন্ধ্যা’ লেখকের তৃতীয় বই। দ্বিতীয় বইয়ের নাম ‘মায়া’ এবং প্রথম বইটি ছিল ‘অনুভূতিরা মৃত’।