“আমি, চঞ্চল হে, সুদূরের পিয়াসী...।” মানুষ যে আজন্ম ভ্রমণের পূজারি। চোখে দেখা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, প্রকৃতির একঘেয়েমি ভাব যখন এই মনকে ক্লান্ত করে তৃষ্ণার্ত, অবসন্ন করে মন তখন আকুল কণ্ঠে ভরে বলতে চায় “হেথা নয় হেথা নয় অন্য কোথা অন্য কোনখানে।” পৃথিবীতে ভ্রমণ করেন নি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু সবাই লিখতে পারেন না, লিখলে সেই লেখা পাঠকের আস্থার জায়গা তৈরি করতে হয়। সেটাই বা ক’জনই পারেন। লেখক রেজাউল করিম রুমী তাঁর প্রথম চেষ্টাতেই সফল বলা যায়। ‘দিল্লিতে কবিরাজি ও মানালি উপাখ্যান’ ভ্রমণ সাহিত্যের অনন্য এক সংযোজন। তাঁর চোখে দেখা আর অন্তরদৃষ্টি অবলোকনে যে আখ্যান তৈরি করেছেন তা অতুলনীয়। বুঝাই যায় নি লেখক প্রথম লিখেছেন এরকম একটা বই। এটা প্রমাণিত এই রচনায় তিনি ভ্রমণ লেখার সকল উপাদানকে অত্যন্ত সাবলিলভাবে সাহিত্য নির্ভর শব্দ চয়নে ফুটিয়ে তুলেছেন। যা অনেক পরিশ্রমলব্ধ। একটা জাতি, জনগোষ্ঠী, সামাজিকতা, সংস্কৃতি, ভৌগলিক ইত্যাদি বিষয়কে একেকজন একেক ভাবে দেখেন। ভ্রমণ লেখার এই চরিত্রায়নে যিনি স্বার্থক রূপকার, সময়ের সাথে সেটিই কালোত্তীর্ণ হয়ে উঠে। যা একটা সময়, সভ্যতার সাক্ষি। লেখক এর বইটি তেমনি একটা দলিল হয়ে উঠবে সেই প্রত্যাশা রইল। পাঠক আসুন ভ্রমণ সাহিত্যের এমন এক আখ্যানে প্রবেশ করি যেখানে লেখকের সাথে আপনিও নিজেও সেই পরিভ্রমণের যাত্রি হবেন।