সোহেল মাহবুব বর্তমান কাব্যজগতে বেশ পরিচিত নাম। ইতোপূর্বে পাঁচ-পাঁচটি কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে কবির। একজন সংগঠক, ছোটগল্পও লিখেন। সম্পাদনা শিল্পে পদচারণা রয়েছে তাঁর। প্রতিনিয়তই পোক্ত-পরিণত হাতে লিখে চলেছেন অবিরত কল্পনার বেলাভূমিপ্রসূত ছন্দবদ্ধ শব্দমালা। তাঁর এবারের কাব্যগ্রন্থ “নেমে আসে উড়ন্ত জল” সদ্য রচিত সাতান্নটি কবিতা নিয়ে। প্রেম-প্রকৃতি- কখনো পাহাড় কখনো সমুদ্র, কখনো ভালোবাসা কখনো প্রতিবাদ, অভিমান, রাগ-বিরাগ আর অনুরাগের দুর্মর পংক্তিমালার সমাহার তাঁর কবিতাকে পৌঁছে দিয়ে এক অনন্য অনুভূতির সুউচ্চ সবুজাভ উপত্যাকায়। “দেয়ালে উড়ছে রঙ” কবিতা দিয়ে গ্রন্থের সূচনা। কবিতা রচনার কসরত আর ইতিহাসের পটভূমিই সুক্ষè তুলিতে এঁকেছেন কবি তাঁর সুনিপুণ শব্দের গাঁথুনিতে। প্রত্যেকটি কবিতার নিচে রচনার সময়কাল দেয়া, ক্রমিক অনুসারে সাজানো কবিতাগুলো। ‘অন্ধ’ কবিতায় কবির নস্টালজিয়ায়, সংলাপে-প্রলাপে প্রকৃতি ও ঐতিহ্যের শব্দমালায় বোহেমিয়ান ভালোবাসার রপ। “কী ছিল ঐ চাঁদমুখে মায়াবতী সবুজ দেহে? সারা ঘরময় তুলেছিলে কামরাঙা তরঙ্গ নেচেছিল তোমার চোখ... ...ভালোবাসা এখন অচেনা দ্বীপে এখন তোমার আঁচল ওড়ে ঢাকা উঠোনে ...শব্দ শব্দ খেলায় মেতে ওঠে নরম ঘাস।” কবি সোহেল মাহবুবেব প্রতিটি কবিতার ভাষা এমনই। অনেক জীবন্ত, প্রাণবন্ত, সতেজ এবং লক্ষ্যভেদী। তিনি কবিতায় কথা বলেন ভালোবাসার, জীবনযন্ত্রণার। ঘটনা থেকে, প্রকৃতি থেকে প্রশ্ন তুলে আনেন উত্তর পাওয়ার জন্য নয়- পাঠককে পৌঁছে দেয়ার জন্য নতুন কোনো গন্তব্যে নতুন কোনো মনোভূমিতে। তাঁর কবিতা পাঠ মানেই একরাশ মুগ্ধতা এবং হীমশীতল সজীবতার প্রলেপ।