এই উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে মূলত দেশভাগ হতে মুক্তিযুদ্ধ সময়কালে নিশাতনগর গ্রামের কিছু নারী-পুরুষকে ঘিরে। তাদের প্রেমময় সম্পর্ক, পরস্পর নির্ভরশীলতা, কামনা আর বিরহ। কালাই শেখ ডাকাত সর্দার, নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে তাকে বিয়ে করে সুফিয়া, এই সুফিয়ার মাধ্যমেই পরিবর্তন ঘটে নিশাতনগরের। চিরকুমার ফণীভ‚ষণ ঠাকুরের জন্য এক বুক ভালোবাসা নিয়ে অপেক্ষা করে বউবাজারের বিলকিস। মায়াবী জোছনায় ফণীভ‚ষণের নিষ্পাপ মুখখানির জন্য সব কিছু বিসর্জন দিতে সাধ জাগে তার। কিন্তু ভালোবাসার জন্য বিসর্জন দেওয়ার কী আছে তার। দু’চোখের অশ্রু মোছার জন্য বুকের আঁচলটুকুও আজ অবশিষ্ট নেই। তবু সে চোখের জলটুকু মুছে ফেলতে চায়। বেশ্যার চোখে জল থাকতে নেই। সেখানে থাকবে শুধু কামনার আগুন। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে বউবাজারে আশ্রয় নেয় এলাচি। সুফিয়ার মাঝে মাতৃস্নেহ খুঁজে পাওয়া হাবুর জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে এক হিল্লা বিয়ের কারণে। হিন্দু পরিবারগুলোর দেশত্যাগের মাঝে ধনী হয়ে ওঠে কালাই শেখ, সুরুজ আলী। আসে মুক্তিযুদ্ধ, সারা দেশের মতোই নিশাতনগরেও ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রতিশোধের নেশায় পদ্মার পারে শুরু হয় যুদ্ধের ট্রেনিং। ছয় মাসের পোয়াতি আর্জিনার আত্মহত্যার পরে পাগল হয়ে যাওয়া মতির অপেক্ষা আর শেষ হয় না। যেমনি শেষ হয় না বেদেকন্যা গোলাপীর স্বামীর জন্য অনন্ত অপেক্ষার। হাবু কি ফিরে আসে যুদ্ধ থেকে? এলাচি কি পারবে কালাই শেখকে খুন করে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে? এক আকস্মিক হিল্লা বিয়ের কারণে জন্ম নেওয়া নয়নের মায়াভরা মুখখানি ভুলে থাকতে পারবে সখিনা? অনেক আশা আর আকাক্সক্ষা নিয়ে নর-নারী শুরু করে সংসার, শুরু হয় আনন্দে ভরা সহবাস। কিন্তু কালবৈশাখীতে লÐভÐ সংসারে সেই সুখের সহবাস পরিণত হয় এক ভয়াবহ দুঃসহবাসে।
সাইদুর রহমান বাংলা সাহিত্যের একজন নবীন লেখক। ছাত্র জীবনে থিয়েটারের সাথে জড়িত ছিলেন তাই লেখালেখির শুরু মঞ্চনাটক লেখার মাধ্যমে। নাটক লেখার পাশাপাশি একাধিক মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন, একাধিক নাটক নির্দেশনাও দিয়েছেন। এছাড়াও টিভি নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি ছিলেন জনপ্রিয় পরিচালক মনির হোসেন জীবনের সহকারী। চলচ্চিত্র পরিচালক হাবার সপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ২০১২ সাল থেকে নিয়মিত লেখালেখি করছে। সাহিত্যদেশ পান্ডুলিপি পুরস্কার প্রাপ্ত ও ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত "দুঃসহবাস" লেখকের প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস। মানুষ ও জীবন লেখকের লেখালেখির প্রধান উপজীব্য বিষয়। সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় লেখালেখি তার অন্যতম শক্তি। আবার সবাই অবসরে বই পড়বে, বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পরবে তার লেখা, বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হবে তার বই, এই সপ্ন নিয়েই লিখে চলেছেন।