সৃষ্টির সময় থেকে এক দেহে একাধিক প্রানের বসবাস। হোক তা উদ্ভিদ, অণুজীব কিংবা যে কোন প্রাণী। কখনো খালি চোখে দেখা যায়। কখনো যায় না। যেমন অণুজীব। মানবদেহ, ভিতরে এবং বাহিরে কত প্রাণ একত্রে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। অতি সূ² আণুবীক্ষণিক যন্ত্রের নীচে দেখলে মনে হবে যেন পাইরেটস অব ক্যারিবিয়ানের সেই জলদস্যু। যাদের শরীরে একাধিক প্রাণের অস্তিত্ব বিরাজমান। কিংবা একই শরীরে অনেক দেহের সমন্বয়। গ্রীক, রোমান কিংবা মিশরীয় প্রাচীন সভ্যতায় দেখা দুই ধরনের প্রাণীর শরীর একই দেহে এক প্রাণে বিরাজমান। যেমন অশ্ব-মানব অথবা মৎস্যকন্যা। অনেক ধর্মের বিভিন্ন দেবদেবীর শরীরেও এক দেহে একাধিক শরীরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্রাচীন মিশরীয় ধর্মে দেবতা আনুবিস, দেবতা হোরাস সহ আরও অনেকেই এক শরীরে দুই দেহের অধিকারী ছিলেন। দেবতা হোরাস ছিলেন একজন শক্ত সামর্থ পুরুষের দেহে একটি বাজ পাখি। অন্যদিকে দেবতা আনুবিস ছিলেন একজন পুরুষ এবং একটি শেয়ালের সমন্বয়ে। দুই প্রাণীর দেহ এক দেহে বিরাজমান দেবতাকে অনুসরণ এবং উপাসনার দ্বারা অতি উৎসাহী কয়েকজন বিজ্ঞানী একই দেহে দুই ধরনের প্রানের অস্তিত্বের সমন্বয়ের পরিকল্পনা করছেন। গবেষক এবং বিজ্ঞানীগন গবেষণা করছেন, প্রাচীন গ্ল্যাসিয়ারে খুঁজে পাওয়া এক সুপ্ত অণুজীবকে সক্রিয় করে নতুন ধরনের প্রান সৃষ্টি করবেন। শুধু জীব এর দেহে নয়, গবেষণা চলছে কোন জড় বস্তু যেমন রোবটের মাঝে প্রানের সঞ্চার করা। রোবটের মাঝে তৈরি করা হবে বায়ো-আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কগ্নেটিভ ডেভেলপমেন্ট (ইরড়-অৎঃরভরপরধষ ওহঃবষষরমবহপব ঈড়মহরঃরাব উবাবষড়ঢ়সবহঃ)। নিউরাল নেটওয়ার্ক এর জন্য প্রয়োজন কয়েকজন বিশেষ শিশুকিশোর। কিন্তু গবেষণা চূড়ান্ত হবার পূর্বেই ল্যাবরেটরিতে পর্যবেক্ষনরত অণুজীবটি নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে সক্রিয় হয়ে পালিয়ে যায়। বিজ্ঞানীগণ আতঙ্কিত হয়ে পরেন সভ্যতার মাঝে অণুজীব এর সংক্রমণের ভয়াবহতা নিয়ে। অণুজীব, খালি চোখে দেখা যায় না। কগ্নেটিভ রোবটেরা কি মানব সভ্যতাকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিবে? নাকি মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিবে? মিশরীয়ু দেবতার অনুসারী বিজ্ঞানীগণকে দেবতা কিভাবে সাহায্য করবেন? যৌক্তিক বিজ্ঞানীগণ কি গোপনে ধর্মের অনুসরণ করবেন? রোবটেরা কি দেবতার উপাসনা করবে? অথবা কেউ অটল বিশ্বাস নিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করবেন মহাবিশ্বের মহান বিজ্ঞানীর কাছে?
জন্ম, বেড়ে উঠা এবং স্বপ্ন দেখার শুরু কুমিল্লায়। কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং ভিক্টোরিয়া কলেজ হয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ইংল্যান্ড এর টিসাইড ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পিএইচ.ডি অর্জন করেন। একই স্কুলে এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এবং রিসার্চ মেথডোলোজি বিষয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণায় নিয়োজিত হন। সরকারি, এনজিও, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, গবেষণায় অতিবাহিত মাসুম আহ্মেদ পাটওয়ারী’র কর্মময় জীবন। বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ মেডিকেল বর্জ্যরে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তার লেখা বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের নামকরা প্রথম সারির জার্নালে। তিনি বর্তমানে কাজ করছেন ক্যালিফোর্নিয়া স্টেইট গভর্মেন্ট-এর পরিবহন বিভাগে, পরিবেশ পরিকল্পনাবিদ হিসেবে। মাসুম আহ্মেদ পাটওয়ারী পেশাদার লেখক নন। তবে বৈচিত্র্যময় কর্মজীবন এবং গবেষণার ধারাবাহিকতায় গবেষণা করেন মানবজীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। নিজ আগ্রহে গবেষণার প্রাপ্ত ফল বিশ্লেষণ করে গল্পের মতো করে উপস্থাপন করে লেখা তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তার প্রকাশিত প্রত্যেকটি বই একেকটি নির্দিষ্ট গবেষণা-গল্প। ‘সম্মান আমাকেই আমি’ বইটি মাসুম আহ্মেদ পাটওয়ারী’র পঞ্চম প্রকাশিত গবেষণা-গল্প। তার অন্য প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হচ্ছে- বার্ধক্যে বসবাস, একাত্তরের জিম্মি, প্রচ্ছন্ন কৈশোর, স্বপ্নকথা ।