প্রকৃতি থেকে রোগ হয়; প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে থাকে নিরাময়। তাই, একটু সতর্ক হলে নিজেই নিজের ডাক্তার হয়ে উঠা যায়। অধিকাংশ রোগের ‘রুট কজ’ হলো পাকস্থলি। এই পাকস্থলিকে ঠিক রাখতে হলে খেতে হবে বিশুদ্ধ ও সজীব খাবার (প্রক্রিয়াজাত খাবার বা জাঙ্ক ফুড নয়)। খাবারকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। অ্যাসিডিক (অম্লিয়) ও অ্যালকালাইন (ক্ষারিয়) খাবার। অ্যাসিডিক খাবার যতটা পারা যায় কম খান, বেশি বেশি খান অ্যালকালাইন খাবার। কারণ, অ্যাসিডিক খাবার পাকস্থলিকে দূর্বল করে দেয়, শরীরকে করে তোলে অ্যাসিডিক। ‘অ্যাসিডিক শরীরে’ বাসা বাঁধে গ্রাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের মতো আরো নানা রোগ-বালাই। অন্যদিকে অ্যালকালাইন খাবার শরীরকে করে তোলে শক্তিশালী। ‘অ্যালকালাইন শরীরে’ রোগ-জীবাণু টিকতে পারে না। তাই, শরীরকে অ্যালকালাইন স্টেজে রাখতে চেষ্টা করুন। এতে দেহের এনার্জি ঠিক থাকবে, সমৃদ্ধ হবে দেহের ইমিউন সিস্টেম। কোনো রোগ-জীবাণুর আক্রমণ হলেও সেটা তখন আর আমাদের কাবু করতে পারবে না। দেহের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপলদ্ধি করুন। সৌন্দর্যকে গ্রহণ করুন আর বর্জন করুন কুৎসিতকে। আমাদের ইন্দ্রিয় প্রকৃতি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং মনকে ভরিয়ে রাখে। প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত সৌন্দর্য মনকে স্থির ও শান্ত করে আর কুৎসিত মনকে অস্থির ও অশান্ত করে। প্রকৃতির সৌন্দর্য মনের ভিতর থেকে সকল অপশক্তিকে দূর করে। দেহের ভিতরের অপশক্তি দূর হলে বাইরের রোগ-জীবাণু শরীরে টিকতে পারে না। প্রকৃতির সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠে ভোরে। ভোরে ঘুম থেকে উঠুন, খোলা হাওয়ায় অথবা বাড়ির ছাদে কিছুক্ষণ পায়চারি করুন। মনের অপশক্তি দূর হবে, শরীর ফিরে পাবে শক্তি। সমস্ত এনার্জীর আধার সূর্য। পৃথিবীর উদ্ভিদকুল ফটোসিন্থেসিসের মাধ্যমে সূর্যের সেই এনার্জী গ্রহণ করে। কিভাবে? উদ্ভিদের মধ্যে থাকে ফাইটোক্যামিকেলস। এই উপাদানটি সূর্য থেকে অ্যানার্জী গ্রহণ করে নিজের মধ্যে জমা রাখে। এই ফাইটোকেমিক্যালস উদ্ভিজ্জ খাবার, ফল-ফলালি ও শস্যদানার মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এবং দেহের প্রতিটি সেলে শক্তির যোগান দেয়। একমাত্র উদ্ভিদ জগতের মাধ্যমেই সূর্য শক্তি আমাদের শরীরে আসতে পারে। এই শক্তির অভাবেই আমাদের দেহ ডিফিসিয়েন্সি অব এনার্জিতে ভুগে। আর এ কারণেই খাবার নির্বাচনে রাখতে হবে সতর্ক দৃষ্টি। সবারই উচিত সঠিক খাদ্য নির্বাচনে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখা। যারা আজীবন সুস্থ থাকতে চান, তাদের জন্যই আমার এ বই, আমার এ পরামর্শ। বইটি কোনো চিকিৎসা শাস্ত্র নয়। চিকিৎসা শাস্ত্র রোগ-বালাই সারানোর জন্য। আর এ বইটি নিরোগ জীবন যাপনের জন্য।