তারুণ্যের স্বতস্ফূর্ত সৃষ্টিশীলতার প্রতি আমি সবসময়ই আস্থাবান। এদের মধ্যেই আমি অন্বেষণ করি নতুন সৃষ্টির প্রণোদনা। তাদের এষণা ও প্রতীতি আমাকে আশান্বিত করে। জানি, অনেক ক্ষত্রেই এটি দুরূহ সাধনার বিষয়। তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছেন, যাদের প্রাণোচ্ছল মনস্বিতা দেখে চমকে যেতে হয়। এরকম এক তরুণ ‘আদিল মাহমুদ’ এর কবিতাগুচ্ছ দেখে আমার এই বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে। তার কবিতার চিত্রকল্প, বুনন, উপমা ও রূপকের অভিনবত্ব আমাকে মুগ্ধ করেছ। একইসাথে প্রতিকাশ্রয়ী ও নিহিতার্থনিষ্ঠ তার কবিতায় জড়িয়ে আছে আভ্যন্তর অভিজ্ঞান। ‘আমাদের প্রেমের ঐশ্বর্য/যেনো সুরা বাকারার বৈচিত্রের মতো সুন্দর।’ এই উপমা নতুন ও নিজস্বতায় ভাস্বর কিংবা যখন ভলোবাসার বিরহের তুলনা করে কবি লিখেন ‘যেভাবে কুরআন ভুলে যায়/তারাবি না পড়ানো হাফেজ।’ তখন বুঝতে অসুবিধা হয় না এ কবির স্বাতন্ত্র্য। তিনি নৈরাশবাদী নন, আশাবাদে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘আমার কোনো নি:সঙ্গতার ভয় নেই/হে জীবন, তুমি জানো না?’ এরকম অনেক উজ্জ্বল পঙ্তির উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। তবে পাঠকের অনুসন্ধিৎসার উপর বাকিটা ছেড়ে দেয়া হলো। বইটির নাম ‘আবাবিল’। নামের মধ্যেও তাৎপর্যতা জড়িয়ে আছে। অপশক্তির ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সত্য ও সুন্দরের যে উদ্ভাস আভাসিত হয়েছে তা বিস্তারিত তার কাব্যগ্রন্থে। বইটির প্রতিটি কবিতায়ই তার কমবেশি স্বাক্ষর রয়েছে। এটি কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। যাত্রা সবেমাত্র শুরু হয়েছে বলা চলে। আমি তার মধ্যে অমিত শক্তির আভাস ও দ্রুতি লক্ষ করেছি। আগামি দিন হোক আদিলের আরো দাঢ্য ও রক্তমনির মতো দীপ্যমান। কবি তমিজ উদদীন লোদী নিউইয়র্ক, আমেরিকা
আদিল মাহমুদ আপাদমস্তক একজন সৃষ্টিশীল লেখক। তার শব্দ নির্বাচন, প্রয়োগ কৌশল, অনবদ্য চিত্রকল্প, সৃষ্টি বৈচিত্র, নির্মাণশৈলী আনন্দদায়ক। সিলেটের কানাইঘাট থানার ভাটিদিহি গ্রামে ২০ জুন ১৯৯৮ সালে আদিলের জন্ম। পিতা: আনওয়ারুল আম্বিয়া মানিক, মাতা: জোছনা আহমেদ। ছেলেবেলা থেকে থাকেন ঢাকা শহরে। পড়ালেখা করেছেন জামিআ ইকরা বাংলাদেশে। শৈশব-কৈশোর থেকে টুকটাক লিখেন। এখন নিয়মিত। নিজেকে প্রকাশের মাধ্যম কবিতার পাশাপাশি গল্প ও প্রবন্ধ লিখে চলছেন অবিরাম। অনুবাদ সাহিত্যেও আছে তাঁর বিরাট দখল। সামনে আদিল মাহমুদ আমাদের বাংলা সাহিত্যে আরও বড় বড় বিস্ময় নিয়ে হাজির হবেন।