বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ভূমিকা فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ؕ وَ مَا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الْغُرُوْرِ অর্থ : যাকে জাহান্নাম হতে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হবে, মূলতঃ সে-ই সফলকাম এবং পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতিত আর কিছুই নয়। (আলে ইমরান : ১৮৫) মু’মিনের স্থায়ি ঠিকানার নাম জান্নাত। পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ি। পরকালের জীবনই অনন্ত-অসীম। দু’দিনের দুনিয়ার এই জীবনকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে স্থায়ি জান্নাতের প্রস্তুতি নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আসুন জান্নাত পেতে কুরআন হাদিসের হেদায়াত জানি ও মেনে চলি। করুণার আঁধার দয়ার সাগর মহান মহিমাময় আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন জান্নাত-জাহান্নামসহ সমগ্র বিশ্বজগতের একচ্ছত্র নিরঙ্কুশ মালিক। শুধুমাত্র তাঁর দয়া, রহমত ও মেহেরবানিতেই জান্নাত লাভ করা সম্ভব। এছাড়া, এমন কোন আমল বা কাজ নেই যার বদৌলতে তা লাভ করা যায়। একদিন সাহাবাদের ভরা মজলিসে আল্লাহর রসূল সা. বলেন, “আল্লাহর দয়া ব্যতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, জনৈক সাহাবি প্রশ্ন করলেন, আপনিও না? তিনি স. জবাব দিলেন, আমিও না। একটি ঘটনা প্রবাহে উল্লেখ আছে, এক আবেদ বললেন যে, তিনি যে আমল করেছেন এর বিনিময়ে জান্নাতে যেতে পারবেন, রাতে স্বপ্নে দেখলেন তিনি হাশরের মাঠে হাজির হয়েছেন। পানির প্রচণ্ড পিপাসায় তার কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবার উপক্রম হলো। তিনি পানির জন্য চিৎকার করলে এক গ্লাস পানি পেলেন তার গোটা জীবনের নেকের বদলে। এ পানি পান করে তার পিপাসা নিবারণ হলো না; বরং পিপাসা বহুগুণে বেড়ে গেল। তিনি চিৎকার করছেন পানি চাই, পানি দাও বলে। হঠাৎ তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি বুঝলেন সত্যিই কোন আমলের দ্বারা নয়, কেবল আল্লাহর দয়ায়ই জান্নাত লাভ করা সম্ভব। يَا اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا اذْكُرُوا اللهَ ذِكْراً كَثِيراً ـ وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَاَصِيلاً ـ هُوَ الَّذِى يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلَائِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ اِلَى النُّورِ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيماً ـ تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُ سَلَامٌ وَاَعَدَّ لَهُمْ اَجْراً كَرِيماً ـ অর্থ : হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো। তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও তোমাদের জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে অন্ধকার হতে তোমাদের আলোতে আনার জন্য এবং তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। যেদিন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে, সেদিন তাদের প্রতি অভিবাদন হবে ‘সালাম’। তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন উত্তম প্রতিদান। (আহযাব : ৪১Ñ৪৪) বিশাল আকাশের চেয়েও বেশি আল্লাহর দয়া। তাঁর দয়ার ১০০ ভাগের মাত্র ১ ভাগ আর রহমান হিসেবে পৃথিবিতে দিয়েছেন। যা শতশত কোটি মানুষের হৃদয়ে, মায়ের বুকে, কোটি কোটি জীব-জন্তুর মধ্যে তা দৃশ্যমান। আর ৯৯ ভাগ দয়া তাঁর নিকট মওজুদ রয়েছে। যা তিনি আর রহিম হিসেবে মু’মিন বান্দাদের প্রতি বর্ষণ করে পরকালে তাদের জান্নাতে পৌঁছাবেন। তাই তাঁর দয়া ও রহমত পাওয়ার জন্য কি কি করতে হবে? এ ব্যাপারে সামান্য ধারণা দেয়া হয়েছে এই পুস্তিকায়। আপনারা ইহা পাঠ করে জান্নাত পাওয়ার জন্য কুরআন-হাদিস অনুসন্ধান করে সঠিক আমল অব্যাহত রাখবেন। এতে লেখক ও পাঠক সকলেই জান্নাত লাভ করতে পারবো এই আকুতিই দয়াময় আল্লাহর নিক রাখলাম। ভুল-ভ্রান্তি হলে মেহেরবানি করে জানাবেন। পরবর্তি সংস্করণে সংশোধন করা হবে ইনশা-আল্লাহ। পুস্তিকাটি আরো সুন্দর ও অর্থবহ করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দানের জন্য অনুরোধ করা হলো।