একজন কবি প্রচেষ্টা জারি রাখে নিজেকে ভাঙার এবং গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসার। কেননা প্রকৃত কবি কখনো তার সমসাময়িক সময়ে অবস্থান করে না। সে অবস্থান করে অনাগত ভবিষ্যতে। কবি অরবিন্দ চক্রবর্তীর শক্ত অবস্থান সেই অনাগত ভবিষ্যতে । অরবিন্দর কবিতায় যেমন রয়েছে ভাষা বা বয়ানের অভিনবত্ব তেমনি রয়েছে কাঠামোবাদী নিরীক্ষা-কৌশল। এ কবিতা শুধু পাঠের নয়, দেখার এবং শোনারও । ভাষাকে অরবিন্দ কবিতার অনিবার্য অঙ্গ হিসেবে না দেখে একটি ‘টুলস' হিসেবে দেখে। যে কারণেই তার কবিতায় এই ‘টুলস’ প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হয় নবকৌশলে, পায় নবমাত্রা। এই বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এই বইয়ের কবিতা পড়লে পাঠক কখনো শূন্যে উড়বে, কখনো হোঁচট খাবে, কখনো পিছু হটবে, কখনো ভোঁ-দৌড় দেবে আবার কখনো-বা থ মেরে বসে রইবে। অরবিন্দর কবিতার এমনই বিচিত্রতা, এখানেই সার্থকতা। রোলাঁ বার্ত বলেন, “একজন সাহিত্যিকের সবচেয়ে বড় অপরাধ হলো যখন তিনি পাঠককে এই বলে পথভ্রষ্ট করেন যে, ‘ভাষা একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ মাধ্যম, যার দ্বারা সত্য বা বাস্তবের যথাযথ ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। একজন সংবেদনশীল ও বিশ্বস্ত সাহিত্যিক ভাষা-কৌশলের খেলা ঠিক বুঝতে পারেন ও তাই নিয়ে বাজি খেলেন ।" অরবিন্দ সেই ভাষা-কৌশলের খেলায় একজন তুরীয় বাজিকর, ‘অ্যাকোস্টিক শরীর সুতরাং গিটারপূর্ণ এবং ফুর্তি অর্গ্যানিক' তার অন্যতম বাজির ঘোড়া এবং এই বাজিতে তার জয়ের পাল্লা ক্রমশ ভবিষ্যতের দিকে ধাবমান।
Title
অ্যাকোস্টিক শরীর সুতরাং গিটারপূর্ণ এবং ফুর্তি অর্গ্যানিক