বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ এ দুটো কোনো আলাদা বিষয় নয় বরং পরস্পরের পরিপূরক। ১৯৭১-এর মার্চে পাকিস্তানের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ‘যোশেফ ফারল্যান্ড’ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সাক্ষাৎ করে পরিষ্কারভাবে বুঝেছিলেন যে, শেখ মুজিবের নিকট স্বাধীনতার বিকল্প কোনো কিছুই গ্রহণী নয়। তারই ফলাফল নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতার শত্রুরা থেমে থাকেনি। তাদের অন্তহীন হিংসায় বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত অস্থিরতা আর স্থিতিহীনতা বিরাজ করতে থাকে। তাদের সমস্ত আক্রোশ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে কেন্দ্র করেই বার বার ছোবল হেনেছে। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাও ছিল অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ। ১৯৭১-এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছিল, সে সকল নিহত পরিবারের পরিচিতি এহছানুল মালিকী তাঁর ‘১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি’তে বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। বিশ্ব ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকা- ঘটিয়ে একটি পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করা কোনো ব্যক্তিগত হিংসার পরিণতি হতে পারে কিনা আগামী দিনের ইতিহাসবেত্তাগন ভালো বলতে পারবেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, পরমাত্মীয় মুক্তিযোদ্ধা শেখ মনি, আবদুর রব সেরনিয়াবাতসহ সকলকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই বদলে ফেলতে চেয়েছিল নির্মম ঘাতকগোষ্ঠী। এরকম হত্যাকান্ড পৃথিবীর বুকে ইতোপূর্বে কোনোদিন ঘটেনি। যাদের সেদিন হত্যা করা হয়েছেন তাঁদের সচিত্র পরিচিতি এবং যে সকল দুর্লভ ছবি ‘১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি’ গ্রন্থে এহছানুল মালিকী সংযুক্ত করেছেন, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আগামী প্রজন্মকে ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে রেহাই দিতে এবং সঠিক ইতিহাস জানাতে এহছানুল মালিকী’র পরিশ্রম ও মেধা পাঠকগণ আশা করি মূল্যায়ন করবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে গ্রন্থটির সাফল্য কামনা করছি।
ড. আ. ন. ম এহছানুল মালিকী। জন্ম : ঢাকার মুগদাপাড়া। পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থাকায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ বেতারে সংবাদ উপস্থাপনার পাশাপাশি তিনি ‘বাংলাদেশ প্রতিবেদনের’ একজন সিনিয়র সাংবাদিক। এছাড়াও তিনি দৈনিক পত্রিকা ও মাসিক পত্রিকায় লেখালেখিতে রয়েছেন। তার সর্বপ্রথম ২০২০ সালে একুশের বইমেলাতে ‘মুক্তিরপথের অগ্রদূত : নেতাজি সুভাষ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে উপন্যাস ‘ভালোবাসার পাঞ্চক্লিপ, ২০২১ সালে ‘বাবাবৃক্ষ’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে ‘সম্পর্কের বৃত্ত’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে ‘হেরার জ্যোতি’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে নীতিতে আপোষহীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব (সম্পাদিত) প্রকাশিত হয়। তিনি ২০২১ সালে নবকন্ঠ প্রকাশনী হতে সেরা লেখক ও ২০২২ সালে উপন্যাস ‘ভালোবাসার পাঞ্চক্লিপ’-এর জন্য বাংলাদেশ তারুণ্য সাহিত্য একডেমি হতে সেরা কবি-লেখক সম্মাননা পান। [email protected]