কবির মনোবনে কবিতার ফুল ফোটে নাকি কবিতার মধ্য দিয়ে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেন কবি! আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক-সত্য চিরন্তন। মানব মনের মননশীলতা, সৌন্দর্য্য, অনুভূতি, স্বপ্ন, চিন্তন এবং রসবোধ প্রকাশ্যে হোক, অন্তরালে হোক, প্রকাশিত হয় বর্নিল বৈচিত্র্যে; কবিতার ছন্দে-ভাষায়-রূপে-গুণে। হাজার বছর ধরে চলতে থাকা মুখোশের মিছিলে হারিয়ে যাওয়া অগণিত না বলা কথা আজ সরব হয়ে উঠেছে। কবি নাহিদ সারোয়ার স্বজাত প্রতিভা। অনুসন্ধিৎসু মন তার ঘুরে ফিরে- মানুষের মিছিল, ক্লাস রুম, খেলার মাঠ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সর্বত্র। আবার কখনো মনের অন্তহীন প্রেমানুভূতি ও অসহনীয় সুখ-দুঃখের ভাবনা কবির কলমকে মুখরিত করেছে। শিক্ষা জীবনের মোহনীয় অংশ বিশ্ববিদ্যালয়। কবির কবিতার ফুল, কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে উঠতে শুরু করেছে অনেক-অনেক দিন ধরে। তাই কুঁড়ি ফোটার প্রায় কুড়ি বছরের ফুলের ডালি 'মুখোশের মিছিল'। সুদীর্ঘ এ পথ চলায় কবি ঘুরে ফিরেছে প্রকৃতি আর প্রেমের ভুবনে। গ্রামের মেঠো পথ ধরে, শহরের কংক্রিটের রাস্তা দিয়ে, গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে। আকুল আবেগে প্রেয়সীর কাছে নিবেদন করেছে মিলনের ব্যাকুলতা। সুধা স্বপ্নে মুখোমুখি কবি-কবিতা-প্রকৃতি-বাস্তবতা। অন্যদিকে, দেশ, জাতি, সমাজ ও সংসার মাত্রই কবিতার খাতা খুলে কবি নিজের বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দিয়েছে। 'মুখোশের মিছিল' থেকে খু্ঁজে এনেছে ঘুণেধরা সমাজের বিষবাষ্পের লেলিহান শিখা, কলমের কালিতে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সভ্য জগতে মানুষবেশী অসভ্যজনের ভয়াবহ ছোবলের কাহিনীও। কখনো আধুনিক শিল্পরীতিতে, কখনো ছন্দ-তালে লেখা কবিতাগুলোয় সকলের মনের কথা সরব হয়েছে যেন, সব মুখোশ ছিঁড়ে। কবিতার ক্যানভাসে কবি নাহিদ সারোয়ার নবীন হলেও তার হৃদয়স্পর্শী ঐহিক ও পারত্রিক শানিত ভাবনা নিশ্চই আশার সঞ্চার করবে কবিতাপ্রেমীদের-এ আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস। আকুন্ঠ পান করার অসীম রসদ-সম্ভার সবার মনে অন্যরকম দোলা দিয়ে যাবে নিশ্চই।
প্রকৃত নাম- মোঃ সারোয়ার জাহান নাহিদ তবে নাহিদ সারোয়ার হিসেবেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধিক পরিচিত। জন্ম ১৯৯২ সালের ২৫ জানুয়ারী, জলঢাকা, নীলফামারীতে। বাবা ছাইদুর রহমান, মা নার্গিস নূরানী। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ালেখা করেছেন যথাক্রমে নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও রংপুর সরকারি কলেজে এবং জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তিতে বিএসসি (অনার্স) ও এমএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন।