কবি ও ছড়াকার জাহানারা নাসরিন চর্চার মাধ্যমে প্রতিভার উৎকর্ষ সাধনে আত্মপ্রত্যয়ী। ছড়ার আবেগ তার অন্যরকম। লেখার আনন্দ অপরিসীম। শেখার এবং লেখার দুর্দমনীয় নেশা কবিকে অনেক দূর এগিয়ে নেবে বলে আশাবাদী আমি। কবি আক্ষেপের সুরে বলেন, এমন অনেকেই আছে-- যাদের কেউ নেই সঠিক নির্দেশনা দেয়ার! তাই উর্বর মনোভূমি থাকা সত্ত্বেও তারা উন্নত সৃজনশস্য ফলাতে ব্যর্থ হয়ে ছেড়ে দেয় লেখালিখি। গুরুসন্ধিৎসু ছড়াকার জাহানারা নাসরিন তাই অগ্রজদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে উদারচিত্ত। 'প্রিয় কবি নজরুল', 'সোনার ছেলে' অথবা 'প্রিয় কবির জন্মদিনে' শীর্ষক ছড়া-কবিতায় প্রকাশ পায় কবি নিজে অধ্যাত্মবোধে বিনম্র এক ভক্তসাধক। সাধনার মূলদর্শন আত্মস্থ করার অভীপ্সায় তার আত্মত্যাগের যন্ত্রণা অপরিসীম আনন্দের ফল্গুধারা রূপে প্রতিভাত হয় ছড়ায়-কবিতায়। আমি বলে থাকি, কবিরা ভিন্ন জগতের মানুষ এবং অনেক উঁচু স্তরের প্রেমিক। সৃষ্টিতে প্রেম, স্রষ্টাতে প্রেম। জাহানারা নাসরিন শেখার ক্ষেত্রে যেমন দৃঢ় প্রত্যয়ী, তেমনি লেখার ছত্রে ছত্রে উপমা, অলঙ্কার, শব্দ প্রয়োগেও দারুণ আত্মবিশ্বাসী। তিনিও বিশ্বাস করেন,"কবিতার সুখ সকল সুখের চেয়ে আলাদা। জগতের যাবতীয় যাতনার দুঃখময় মুহূর্তগুলোকে এক নিমিষেই কবিতার সৌরভে ধুয়ে নেয়া যায়।" আমি বলবো, জ্ঞানান্বেষণের বেলায় অন্তরের এমন সারল্য মানুষের খ্যাতিকে আকাশচুম্বী করে তোলে। উন্নত ও সহজাত দার্শনিক জ্ঞান থাকলেই কেবল একজন মানুষ কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী-সাধক, মানবিক ও আদর্শ সমাজকর্মী হয়ে উঠতে পারে। ছড়াকার জাহানারা নাসরিনের উর্বর ভাষাজ্ঞান এবং একটা সম্পূর্ণ সমৃদ্ধ ও সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি তাকে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দেবে অনায়াসেই। প্রথম প্রকাশিত ছড়াকাব্য 'এই ধরেছি বাজি' পাঠকপ্রিয়তা লাভ করবে বলে বিশ্বাস করি। শুভকামনা। অধ্যাপক নঈম শামীম খান বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক।