চারদিকে নিঃস্তব্ধ নীরব এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। পত্রপল্লব দিয়ে টপটপ করে পানি ঝরে। দূর থেকে দূরে ভেসে আসছে নতুন নিশীথ রেলগাড়ির আওয়াজ। সেই আওয়াজে বিবাগী মনে ছুটে যায় অতীতের স্মৃতির খাতায়, সেই সুখময় দিনের সান্নিধ্যে। প্রেয়সীর নাম জোছনা। চাঁদের অবাক করা জোছনার সাদৃশ্য ছিল তার অবয়বে। যেন একই অবয়ব। চাঁদনী নিশীথ রাতে মিষ্টি জোছনা মানব মনে নতুন দিগন্তের প্রভাব উন্মোচন করে। জীবনের জোছনা ছিল রুপ যৌবন মিলে অপরুপ সৃষ্টির অনুপম প্রয়াস। রোদেলা দুপুরে, বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় ভরিয়ে তুলতো পরিবেশ মনোরম আবেশে। বালক বেলা থেকে তার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে আমার। একই মেরু বা একই পাড়ার বাসিন্দা আমরা। আমার জননী তাকে আদর সোহাগে রাখতো, প্রিয় কবি রবি ঠাকুরের ভাষায় ঘড়ায় তোলা জল। জোছনা হাফপ্যান্ট আর ফ্রক পরে, মাথায় লাল ফিতে দিয়ে ঝুঁটি বেঁধে চলে আসতো আমাদের বাড়িতে। দুধে আলতা বা কাঁচা হলুদের মত রঙ তার, মা ওর চুল বেঁধে দেবে, কপালের মাঝখানে চন্দ্র ফোঁটা এঁকে দেবে। মায়ের সাথে তার আলাদা এক ভাব। মা জোছনাকে ডাকতে না ডাকতেই জি খালাম্মা বলে দৌড়ে মায়ের কাছে চলে আসতো। মায়ের সাথে কত গল্পসল্প। আমার মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান, কোন কন্যা সন্তান নেই।