নাম শুনে ভাবতেই পারেন, এটি কোনো গল্প বা উপন্যাস নয়। স্রেফ একজন জালাল ভাই নামক ব্যক্তির শোকসভার বিবরণ মাত্র। লেখক হয়ত তাই করতে চেয়েছিলেন কিন্তু ভিতরে তার বাস করে অন্য একজন। তাই শোকসভার আড়ালে নিয়ে এসেছেন রাজনীতি, দ্রোহ, প্রেম ও বিরহ। সেই সাথে উঠে এসেছে বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তের হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জের আশির দশকের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ছোট্ট ছোট্ট কিছু ঘটনার পটভূমি। হাওরের বিশাল জলরাশি, উথাল-পাথাল ঢেউ আর উপচেপড়া জোছনার মতোই এই শহরের তরুণ-তরুণীদের মনোজগত। ঐশ^র্য-সম্পদ বলতে তারা বুঝত প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সমাজ বিপ্লব এবং হৃদয়ের বলা না বলা কথা। এইসব ঐশ^র্যের জন্যই একজীবন বিসর্জন দিতে তারা গর্ববোধ করত। সেই সময়ের একজন বিপ্লবী তরুণ মঈনুদ্দিন আহমেদ জালাল। তাঁকে এবং তার আশপাশের মানুষদের নিয়ে এই উপন্যাসের পটভূমি। ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হলেও জালাল ভাই ছিলেন মূলত সর্বদলীয়। তাই উঠে এসেছে ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদসহ অন্যান্য ছাত্রনেতাদের সেই সময়কার অবদান। যে কারণে উপন্যাসের সবগুলো চরিত্রই বাস্তব। কিন্তু খাঁটি সোনা দিয়ে নিপুণ অলঙ্কার বানাতে যেমন কিছু খাদের মিশেল দিতে হয়। এই উপন্যাসের আরিফ ও ছন্দা নামক দুটি চরিত্র সেরকমই নিছক কাল্পনিক। এই দুটি চরিত্রকে বাস্তবতার সাথে মিলালে লেখক অপরাধী হবেন।