প্রেমের গল্প অনেক লেখা হয়েছে। কিছু কিছু প্রেমের আখ্যান একদম সূচনা থেকে পাঠকের সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করে, শুরু হয় একসঙ্গে পথচলা। লেখকের কলমের তুলিতে আঁকা গল্পের সঙ্গে পাঠক যোগসূত্র বন্ধন গড়ে তুলতে থাকে, আনন্দে উচ্ছ¡সিত-বেদনায় ব্যথিত হয়; প্রতি বাক্যে, প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি অধ্যায়ে- শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। গল্পের আবেদন; প্রেমের অচেনা দুয়ারের অবগুণ্ঠন সরিয়ে পাঠককে হাসায়, কাঁদায়, ভাসিয়ে নিয়ে যায় রোমান্টিকতার জোয়ারে, তাড়িত করে এক নুতন ভাবনায়। ‘নুপুশী, ও, আর অপু’ সেই জাতীয় একটা প্রেমের উপাখ্যান যা পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। হোক সে একজন ১৪ বছর বয়সী দুর্দম হৃদয়ের পড়ুয়া, হোক না সে একজন অপ্রশমিত উদ্যম তরুণ অধ্যেতা, অথবা একজন ৮০ বছরের দুস্প্রাপ্য মনের প্রুফদ্রষ্টা, এই উপন্যাসের স্বতঃস্ফূর্ত কহন প্রতিটি পাঠককে উজ্জবিত করবে কিছু এক্সাইটিং অভিজ্ঞতায়, আপ্লুত করবে প্রেম-ভালোবাসা-মহব্বতের চিরন্তন আবেদনে। ঝরঝরে ভাষা, অনবদ্য সংলাপ, মর্মস্পর্শী প্রেমের আবেদন, চিত্তগ্রাহী ভালোবাসার নিবেদন, কল্প- কাহিনি এক অভাবনীয় বাস্তবতার স্বপ্নে উপস্থাপন, নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি, সময়-কালের চাঞ্চল্যকর বৈচিত্র্য, রচনাশৈলীর দক্ষতা, এবং গতিশীল কাহিনি বর্ণনা যে কোন পাঠককে চমৎকৃত করবে। কমপ্লেক্সসিটি এবং সিমপ্লিসিটির মধ্যে একটা অভূতপূর্ব যোগসূত্র স্থাপন করে একটা সাবলীল প্রেমের কাহিনি এই উপাখ্যানে জীবন্তরূপে টগবগিয়ে উঠেছে। আমেরিকা এবং বাংলাদেশ উভয় স্থানের পটভূমিতে লেখা উপন্যাসটা, ৮০’র দশকের সাধারণ কোনো কিশোর প্রেমের কাহিনি নয় বরং কতগুলো জীবনের বাস্তব কাহিনি, পরিণতি। খুবই অল্প সংখ্যক প্রেমের উপন্যাস আনন্দ-বেদনার যথাযথ এক সার্থক সমতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। ‘নুপুশী, ও, আর অপু’ সেই মানের একটা অনবদ্য সৃষ্টি।