গল্প, কিন্তু গল্প নয়। গল্পের ভেতরে আছে বা¯ত্মবতা। যেমন, অধ্যাপক রেনেসাঁ চৌধুরী যখন কোদ- গ্রহ আবিষ্কার করেন, তখন তাকে কল্পকাহিনি বলাই উচিত। কিন্তু পৃথিবীর পাঠক বুঝতে পারে কোদ- গ্রহ আছে। যেখানেই হোক আছে। পাঠক তখন কোদ- গ্রহের বা¯ত্মবতা মেনে নেয়। শেলী শাহাবুদ্দিন বা¯ত্মব জীবনে যা দেখেন তাই-নিয়ে লেখেন তাঁর গল্প। গল্প বলাটা তাঁর আসল উদ্দেশ্য নয়। আসল উদ্দেশ্য জীবনের কিছু বিরল অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়া। এই গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের বা¯ত্মবতা নিয়ে আছে দুটি গল্প। বাঙালির ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ একদিকে কিংবদšিত্মর চাইতে ভয়াবহ, অন্যদিকে রূপকথার চাইতে রূপময় এক স্বপ্নের অর্জন। মহাকাব্যের উপাদান নিহিত এই মুক্তিযুদ্ধের বহু অজানা বা¯ত্মবতার অসংখ্য গল্পের অšত্মর্গত এই দুটি গল্প। আজও আমাদের অজানা রয়ে গেছে এমন লক্ষ লক্ষ ঘটনা। আজও রচিত হয়নি বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের মহাকাব্য। সাম্রাজ্যবাদের দ্বিচারিতা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আছে কয়েকটি রম্যরচনা। আছে মহৎ মধুর শৈশব স্মৃতির বা¯ত্মব কাহিনি। প্রেম, প্রকৃতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে রচিত বাকি গল্পগুলিও বাঙালির বা¯ত্মব জীবন থেকে নেওয়া জীবনঘনিষ্ঠ কাহিনি। যেমন ঐতিহাসিক ১২ নভেম্বরের বা¯ত্মব ঘটনা নিয়ে রচিত ‘চরম্নয়া ও সমুদ্র’ গল্প। যে উপকূলের মানুষদের উপেক্ষা করে চরম্নয়া বলা হয়, বা¯ত্মবে তারা অনেকেই পৃথিবীর যে-কোনো মহৎ মহানায়কের সমকক্ষ। সবশেষে আছে লেখকের চিকিৎসক দৃষ্টিতে বর্তমান মহামারি নিয়ে কল্পিত এক সম্ভাবনার গল্প। এই সম্ভাবনার কথা চিšত্মা করলে মহামারির চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে আজ পৃথিবীর মানুষের মনে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, আর রাজনৈতিক রেষারেষি চলছে, তার অবসান না হলেও হয়তো তা প্রশমিত হবে। সব মিলিয়ে তাই পৃথিবী ও কোদ- গ্রহের গল্প আসলে সমকালীন ব্যক্তিজীবন, সমাজ, ও ইতিহাসের এক দৈবচয়ন।