বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পুরো প্রেক্ষাপট জুড়েই অগ্রভাগে যে নামটি সামনে আসে সেটি হলো শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বড় ধরনের প্রতিবাদী আন্দোলন সফল করে তোলার পেছনে তরুণ নেতা শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ ভূমিকা লক্ষ করা যায়। এক কথায় বলতে গেলে, ১৯৪৮ সাল থেকেই জাতীয়তাবাদী সব আন্দোলনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে তিনি জনগণের সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে সুসংহত করেন এবং বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজন অনমনীয় নেতা হিসেবে জনমনে স্থান করে নেন। ১৯৬০-এর দশকে যখন তিনি ছয় দফা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তখন থেকেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ‘এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে বাঙালির আলাদা রাষ্ট্র ও জাতিসত্তা গঠনের প্রত্যয় গড়ে ওঠে। তাঁর নেতৃত্বে জনগণের আস্থা ছিল বলেই আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব ম্যান্ডেট পায়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা এবং পরবর্তীতে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। আর এসব কিছুই হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই। ‘নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু : ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামের এই গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংঘটিত প্রতিটি ঘটনাকে সুশৃঙ্খলভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব অনুধাবনের জন্য পাঠকদের জন্য বইটি বেশ উপযোগী হবে বলে আশা করা যায়।