‘অমাবস্যার ফুল’ আঁধার হাতড়ে আলো খোঁজার উপন্যাস। বর্ষণের সৌন্দর্যপিপাসু স্ব-বিরহী মন গাঁয়ে এসে খুঁজে পায় কুমকুম-নামক এক নারীকে। দৃষ্টিহীন কুমকুমের জগৎ এতকাল আঁধারেই জলের মতন ঘুরপাক খেয়েছে। জন্মান্ধ কুমকুম এক আলোকহীন প্রাণ, যে প্রাণকে বর্ষণ তার অতিমানবীয় ভালোবাসায় আলোকাভিমুখী করে তুলেছে। এ উপন্যাসে বর্ষণ-কুমকুম; রবীন্দ্র-কাদম্বরীর মানসপ্রভাবজাত দুই নরনারী। অন্যদিকে হিয়ার সাথে শ্রাবণের এক বৃষ্টিভেজা দিনে বর্ষণের আকস্মিক পরিচয় ঘটে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে বর্ষণের মানসিক সান্নিধ্যপ্রত্যাশী হিয়ার বুকে বর্ষণকে ঘিরে যে নিভৃত প্রেম সঞ্চারিত হয়েছে তা এ উপন্যাসের ঘটনাবৃত্তকে মনোস্পর্শী করে তুলেছে। কিন্তু বর্ষণের মনোভূমি বেষ্টন করে রয়েছে কুমকুমের স্নিগ্ধ ভালোবাসা। অন্ধত্বের চিরায়ত সামাজিক সংস্কার বহনকারী কুমকুমের অকর্ষিত ভূমিতে বর্ষণ ফুটিয়েছে অমাবস্যার ফুল। যেভাবে রবীন্দ্রনাথ কাদম্বরী দেবীর জীবনকে মুকুলিত করে তুলেছিলেন তাঁর অসীম প্রেম ও ভালোবাসার পাদপদ্মে। রবীন্দ্রনাথের সর্ববিস্তারী প্রেম কাদম্বরীকে শেষরক্ষা করতে পারেনি। বর্ষণের অনুভবজাত প্রেম কি পেরেছিল কুমকুমের ভালোবাসাকে শেষরক্ষা করতে? তারই উত্তর খোঁজা হয়েছে এ উপন্যাসের পরতে পরতে।
কবি, গবেষক, ঔপন্যাসিক ও ছোটোগল্পকার। জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি, পূর্বমজমপুর, কুষ্টিয়া। পেশা সহযোগী অধ্যাপক ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। বাংলা বিভাগ, আদমজী র শিক্ষাজীবন এসএসসি কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এইচএসসি শোমসপুর আবু তালেব ডিগ্রি কলেজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'তারাশঙ্করের ছোটগল্পে প্রান্তিক চরিত্রের স্বরূপ' শীর্ষক গবেষণা অভিসন্দর্ভের জন্য অর্জন করেছেন এমফিল ডিগ্রি এবং 'সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাসে ইতিহাসচেতনা' শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। প্রকাশিত গ্রন্থ কাব্যগ্রন্থ: বিনি সুতোয় গাঁথা (২০১৮) উপন্যাস: স্বপ্নঘুড়ি (২০১৪), সেতুবন্ধন (২০১৭), জল রঙের জীবন (২০১৯), অমাবস্যার ফুল (২০২২)। গল্পগ্রন্থ: লালদিঘি ও একজন চিত্রশিল্পী (২০১৫), গহিনে দাগ (২০২০), নিঃশব্দে নির্বাসন (২০২১), কুহক (২০২৩)। ই-মেইল: [email protected]