সেদিন হঠাৎ ফোন করে ফুয়াদ আমাকে বললো, তুহিন, তুই কি নিয়তি বিশ্বাস করিস? ওর কথা শুনে বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেলাম। এ যে দেখছি ভূতের মুখে রাম নাম! নাকি বাজিয়ে দেখছে আমাকে! সহসাই ভেবে পেলাম না ফুয়াদ আমাকে একথা জিজ্ঞেস করছে কেন! ওর মুখে এমন কথা মানায় না। ফুয়াদ আমার অভিন্ন-হৃদয় বন্ধু। এ শুধু কথার কথা নয়, প্রকৃতই ও আমার খুব কাছের বন্ধু। যার কাছে অন্তরের নিভৃততম কথাটিও নিঃসংকোচে খুলে বলা যায়! ফুয়াদ কানাডায় সেটল্ড। এখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে কানাডায় গেছে মলিকিউলার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে। ছাত্র হিসেব সে মন্দ নয়, তবে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাবার ধৈর্য বা প্রয়োজন কোনোটাই ওর ছিল না। ওরা পুরুষানুক্রমে জমিদার। ফুয়াদের বাপ-দাদা যা রেখে গেছেন তাই দিয়ে সে নিশ্চিন্তে পুরো জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু ফুয়াদ সেটা চায়নি। জমিদারি ব্যাপারটা তার মোটেও পছন্দ নয়। ওর ধারণা, গরিবের রক্ত চুষে না খেলে কোনোদিন খুব বেশি মোটা হওয়া যায় না। তার মানে যারাই আজকাল আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে, ধরে নিতে হবে তারা কেউ সোজা পথ মাড়ায়নি। তাদের এই অঢেল ঐশ্বর্যের পেছনে ডালমে কুছ কালা হ্যয়! তবে একটা ভুল সে করেছে। শত চেষ্টা করেও বাবার অনুরোধ উপেক্ষা করতে না পেরে শেষে সেই পুরুষানুক্রমিক পাপের পাহাড় ডিঙিয়ে পাড়ি জমিয়েছে কানাডার টরন্টোয়।