প্রফেসর বিবেকের নাভির গোড়ায় সারা রাত ব্যথা করেছে। ফজরের আজানের আগপর্যন্ত দুই চোখের পাতা এক করতে পারেননি। রাতভর পিজি হাসপাতালের বিছানায় গড়াগড়ি খেয়েছেন। বিবেক ঘুমকাতুরে মানুষ। রাতে ঘুম না হলে দিনের বেলা তার কাছে নরকের মতো মনে হয়। কোনো কিছু করে তিনি শান্তি পান না। জগতের সবকিছু কেমন যেন অর্থহীন লাগে। মেজাজ থাকে চরমে। তখন মাঘ মাস। হাসপাতালের জানালা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া আসছিল। শীতের রাতে লেপের তলে ঘুম না আসার কিন্তু বিরাট যন্ত্রণা আছে। এমন এক যন্ত্রণা, যা কাউকে বোঝানো অসম্ভব। আর লেপের তলে থাকতে পারলেন না বিবেক। শরীর থেকে লেপ ফেলে দিয়ে বিছানায় উঠে বসলেন। তখন কেবিনের জানালায় একটি কাক ডেকেই চলল। কা, কা, কা, কা। বেশি রেগে গেলে কেউ কেউ হাসে। কাকের অসহ্য ডাক শুনেও বিবেকের হাসি পেল। আপনমনে হাসতে থাকলেন। জগতের সব প্রাণী, যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। এক প্রাণী আরেক প্রাণীর মন বুঝতে পারে না, বুঝতে পারে না তার ভাষাও। প্রাণীদের মধ্যে রহস্যময় সম্পর্ক। মানুষ পৃথিবীর সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী হয়েও পাখির মনের ভাষা আজও বুঝতে পারেনি। রহস্যময় হয়ে রইল তা চিরকাল, ঠিক ঈশ্বর যেমন মানুষের কাছে রহস্যময় হয়ে আছে। অনন্তকাল ঈশ্বর মানুষের কাছে রহস্যময় হয়ে থাকবেন। প্রফেসর বিবেকের মাথায় নানা ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছিল।
আসাদুজ্জামান অংশুমান পেশায় সাংবাদিক। লেখালেখি তাঁর নেশা। ছোটবেলায় ঠিক করেছেন, লেখালেখি করেই এই মানবজীবন কাটিয়ে দেবেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুটি। প্রথম উপন্যাস জলে ডোবা প্রাণ। প্রথম কবিতার বই মাটির মৃত মগজ। রহস্যের বেড়াজালে ঘেরা মানুষের অদ্ভুত যে মনোজগত, তার স্বরুপ নানাভাবে উন্মোচিত হয়েছে লেখকের বইয়ে। পনের বছর আগে (২০০৫) জাতীয় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার মাধ্যমে আসাদুজ্জামান অংশুমানের সাংবাদিকতা জীবন শুরু। কাজ করেছেন দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক বর্তমান, দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকায়। বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। লেখক আসাদুজ্জামান অংশুমান যশোরের মনিরামপুরে ১৯৮৫ সালের ২৬ মে (১২ জ্যেষ্ঠ, ১৩৯২ বঙ্গাব্দ) জন্ম জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রজব আলী, মা তাহেরা বেগম। বাবা পেশায় শিক্ষক,মা গৃহিনী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। বাংলাদেশ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক (সম্মান)। যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। আসাদুজ্জামান অংশুমান বিবাহিত। স্ত্রী তাহাসিনা আক্তার, ছেলে শুভজিৎ রহমান শুভ্র ও মেয়ে প্রাণোমা রহমান শোভা।