“মাঝরাতে কী কারণে জানি না, হঠাৎ ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। তীব্র একটা অজানা আতঙ্কে আমি জমে গেলাম। কেন এমনটা ঘটছে, সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না; তবে এটা পরিষ্কার টের পাচ্ছিলাম, এই মুহূর্তে এখানে আমার আশপাশে আরো কেউ বা কিছুর প্রবল উপস্থিতি। সেটা যে কী তা আমার ধারণার বাইরে। শুধু বুঝতে পারছি, চরম অশুভ আর ভীতিকার কিছুর মুখোমুখি হতে যাচ্ছি আমি। সেই অনুভূতিটুকু ছিল অত্যন্ত প্রখর আর ভীতিকর। ব্যখ্যাতীত কোনো কারণে আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম, এখানে যারা হাজির হয়েছে তারা এই পরিচিত পৃথিবীর বাসিন্দা নয়। এরা এসেছে অচেনা কোনো অন্ধকার ভূবন থেকে। চারপাশে কেমন একটা ফিসফাস, গোঙ্গানির শব্দ, নীচু গলায় একসাথে অনেকগুলো কণ্ঠ দুর্বোধ্য ভাষায় কোনো বার্তা দিচ্ছে। টের পাচ্ছি, একটা গভীর ষড়যন্ত্র দানা বেঁধে উঠছে। বিছানায় কাঠ হয়ে শুয়ে দরদর করে ঘামছি। একচুল নড়ার শক্তি নেই। এক সময় চোখে নেমে এলো কালো পর্দা, সেটাকে ঠিক ঘুম বলা যাবে না। যেন আমার সমস্ত চেতনা লুপ্ত হলো……” আবুল কাশেম মোহাম্মদ মিসির আলি, সংক্ষেপে একেএম মিসির আলিকে কাল্পনিক উপন্যাসের বাস্তব চরিত্র ভেবে তার কাছে চলে এসেছে আগুন্তুক। সাহায্য চায়। একেএম মিসির আলি তো আর সত্যি সত্যি গল্প-উপন্যাস থেকে উঠে আসা ক্ষুরধার বুদ্ধির সত্যানুসন্ধানী, রহস্যভেদী নন। এসব উটকো ঝামেলা কেন কাঁধে নিতে যাবেন তিনি? কিন্তু কথায় বলে না- মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। কাল্পনিক চরিত্রের সাথে শুধু নামের মিল থাকার মাশুলটা যে এভাবে দিতে হবে, সেটা কি ঘুণাক্ষরেও টের পেয়েছিলেন একেএম মিসির আলি!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়ালেখা শেষ করে যুক্ত হন সাংবাদিকতায়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আছেন এই পেশায়। পাশাপাশি খণ্ডকালীন শিক্ষকতা এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতার প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। পেশাগত বিষয়ে একাডেমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করেছেন দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ নেওয়ার মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফুলব্রাইট স্কলারশিপ প্রােগ্রামের আওতায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড থেকে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ নিয়েছেন সুইডেনের স্টকহােম ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম ডিপার্টমেন্ট, রেডিও নেদারল্যান্ডস ট্রেইনিং সেন্টার এবং লন্ডনের রয়টার্স ফাউন্ডেশন থেকে। লেখকের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘বিশে বিষ ২০০৯ সালে প্রকাশ করে পাঠসূত্র প্রকাশনী। দীর্ঘ দশ বছর বিরতির পর প্রকাশ পেল ‘২৪ ঘণ্টা। এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস।