”রবির দ্বিতীয় বিয়ে” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: প্রত্যেক মানুষেরই একজন স্বপ্নের মানুষ থাকে। মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নে বসত করে সেই পুরুষ/রমণীর সঙ্গে সারাজীবন যতক্ষণ না মৃত্যু এসে দুজনকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
বিশাল ঠাকুর পরিবারে অনাদরে বড় হওয়া রবির সেই স্বপ্ন-রমণী ছিল পরিবারে বউ হয়ে আসা তারই মতোন অবহেলিতা নতুন বউঠান। পারিবারিক অবজ্ঞা দুজনকে কাছে এনে দিয়েছিল একেবারে ছোঁয়াছুঁয়ির দূরত্বে!
কিন্তু নতুনের প্রত্যাশার বিপরীতে রক্ষণশীল ঠাকুর পরিবার রবিকে যথাবিধি অন্য রমণীর পাণি গ্রহণ করালে শোকে-দুঃখে আত্মহনন করেন নতুন বউঠান। তবে মৃত্যুর আগে রবিকে শিখিয়ে যান আলকিমি-যার সাধনায় একদিন নতুনের প্রেতাত্মা রক্তমাংসের দেহ লাভ করবে, বেঁচে থাকবে রবির সঙ্গে চিরদিন।
মানবিক কুসংস্কারে অবিশ্বাসী হলেও রবি প্রেমের পীড়নে আলকিমি সাধনা করে যান নতুনের দেহ-আত্মা ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলেন তাঁর অমর সব সৃষ্টিতে। তারপর সেই সাধনা পূর্ণ হলে, জগতের সমস্ত অবিশ্বাসের বিপরীতে রবি একদিন দেখলেন তাঁর স্বপ্নের নতুন বউঠান সশরীরে এসে মূর্তিমতী হয়েছে পৃথিবীর বুকে।
নতুন জীবন পাওয়া বউঠানের তত্ত্বাবধানে আলকিমির জটিল, দুর্জেয় প্রাচীন সাধন পদ্ধতিতে রবিও লাভ করতে থাকেন রক্তমাংসের শরীরসহ অমর হওয়ার সেই মন্ত্র। তারপর বহু পথ পাড়ি শেষে আসে সেদিন—যেদিন পৃথিবীর মানুষ দেখে রবি মারা যাচ্ছেন, কিন্তু রবি বউঠানের হাত ধরে যৌবন দোলায়িত দেহে প্রবেশ করেন অমরত্বের নতুন জগতে।
অলৌকিক সেই জাদুবাস্তবতার দম আটকানো যাত্রাপথে রবি-বউঠানের সঙ্গে আপনিও স্বাগত!
Foyez Tauhidul Islam লাইভ স্যাইন্স, ডিপ্লোম্যাসি, ভাষাবিজ্ঞান ও সুফীতত্ত্বের মতো বিষয়ের বোদ্ধা পাঠক, লেখক ও গবেষক। উদ্দাম, ফেনীলোচ্ছল গদ্যে তিনি জটিল মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও ধর্মীয় বিষয় উপস্থাপনে পারদর্শী। বিভিন্ন ভাষার উপর তাঁর দক্ষতা ও ব্যাপক কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা সংবেদনশীল বিষয়কে অবিতর্কিতভাবে উপস্থাপনে তাঁকে মুন্সীয়ানা দান করেছে। এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম ফয়েজ তৌহিদুল ইসলামের। পিতা-মাতা উভয়েই সুফী ঘরানার সাধক হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই গুপ্তবিদ্যা, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব ও সৃষ্টিতত্ত্বের উপর ব্যাপক অধ্যয়ন ও অনুধ্যানের সুযোগ পান। তাই নিজে কঠোর রক্ষণশীল ধর্ম চর্চাকারী হলেও তাঁর লেখায় উদারনৈতিক মতবাদ ফল্নুর মতো প্রবহমান। তাঁর চিন্তা ও লেখায় এসবের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। পড়াশোনা ও চাকরি সূত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিশেষত আমেরিকা ও ইউরোপে ব্যাপক ভ্রমণের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ তিনি। এসব অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞান তাকে কাব্যময় গদ্যের এক মননশীল লেখকে পরিণত করেছে। ২০১৫ সালের বই মেলায় প্রকাশিত “ইহকালে এইসব হয়” তাঁর বিপুল সমাদৃত উপন্যাস।