১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর আলবদর ও রাজাকারদের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উনিশ জন শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ২০ জন শিক্ষাবিদকে হত্যা করে। ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মেসবাহ কামালের সম্পাদনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ২০ জন শহীদ শিক্ষাবিদকে নিয়ে তিন খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থটি। দ্বিতীয় খণ্ডে বরেণ্য তিন শহীদ বুদ্ধিজীবী-মুনীর চৌধুরী, সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য ও ড. সিরাজুল হক খান-এর জীবনালেখ্যর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রোকেয়া হলে গণহত্যা’ এবং ‘আলবদর বাহিনী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে মৌলিক গবেষণা-প্রবন্ধ। এছাড়া পরিশিষ্টে সংযুক্ত হয়েছে ১৯৭২ সালের দৈনিক বাংলা থেকে নেওয়া ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: নির্যাতনের এক অধ্যায়’ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নুরুল উল্লার নিবন্ধ ‘জগন্নাথ হলের মাঠে ২৬ মার্চের সকালে যে মর্মস্পর্শী দৃশ্য দেখেছি আমার জানালা থেকে টেলিস্কোপ লাগিয়ে মুভি ক্যামেরায় তা ধারণ করে রেখেছি’। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিবৃত্তিক পটভূমি নির্মাণ এবং বাংলার জনগণের মুক্তি ক্ষেত্র তৈরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষকগণ যে অবদান রেখেছেন, তা এই গবেষণামূলক গ্রন্থের প্রধান উপজীব্য।
Title
একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় - দ্বিতীয় খণ্ড
Mesbah Kamal- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। ইতিহাস ছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সমাজবিজ্ঞান ও সমাজনীতি নিয়ে দেশে ও বিদেশে পড়াশোনা করেছেন। গত ১৪ বছর ধরে গবেষণা করছেন মূলত আদিবাসীদের নিয়ে। বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায় এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি একজন অগ্রণী সংগঠক। ছাত্র-জীবনে প্রগতিশীল ছাত্র-রাজনীতির পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও সাংবাদিকতার সাথে। পরবর্তীতে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে সংবাদ প্রযোজক ও পরিবেশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। দেশে ফিরে গড়ে তুলেছেন নীতি-নির্ধারণী গবেষণা ও জাতীয় পর্যায়ে এ্যাডভোকেসীর জনমুখী প্রতিষ্ঠান ‘গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ’ (জউঈ)। সেইসাথে ভূমিকা রাখছেন বাংলাদেশ আদিবাসী অধিকার আন্দোলন-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। প্রকাশিত গ্রন্থাবলী চিমনীর মুখে শোন সাইরেন শঙ্খ : পূর্ব বাংলায় ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের বিকাশ-বৃত্তান্ত, দিনাজপুরের তেভাগা আন্দোলন: প্রস্তুতিপর্ব, নাচোলের কৃষক বিদ্রোহ : সমকালীন রাজনীতি ও ইলা মিত্র, অশ্র“-সাগরে মিলিত প্রাণ : মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী ও চা জনগোষ্ঠী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী (বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা, ৫ম খণ্ড), Indigenous Communities (Cultural Survey of Bangladesh, Vol 5), মৃত্যু নাই, নাই দুঃখÑআছে শুধু প্রাণ : নাসরীন হকের প্রতি নিবেদিত বক্তৃতামালা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান : শহীদ আসাদ ও শ্রেণী-রাজনীতি প্রসঙ্গ, নিজভূমে পরবাসী : উত্তরবঙ্গের আদিবাসীর প্রান্তিকতা ডিসকোর্স, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা (প্রথম খণ্ড), শতাব্দীর সাথে সাতচল্লিশ বছর : মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের আত্মকথা, Reflections on Diversity and Citizenship: Bangladesh and Beyond, Unbroken Silence: A Participatory Study on Indigenous Society, Santal Community in Bangladesh : Problems and Prospects, পার্বত্য চট্টগ্রাম : সংকট ও সম্ভাবনা, ক্ষুদ্র ঋণ : বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা, শ্রেণী-দৃষ্টিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। আরিফাতুল কিবরিয়া (মুন্নী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন সমাজবিজ্ঞানে এবং তাঁর আগ্রহ আদিবাসী ও নারীসহ সমাজের সব বঞ্চিত জনগোষ্ঠী পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত। গবেষণা করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্রঋণের প্রভাব, নারীর ক্ষমতায়নের সরকারি আখ্যানের বিপরীতে আদিবাসী নারীর হাল এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে। গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ (RDC)-এর সাথে কর্মসূত্রে যুক্ত। বর্তমানে চীনের বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচ.ডি পর্যায়ে গবেষণা করছেন। এটি তাঁর প্রথম গ্রন্থ।