"আঙ্কল টমস কেবিন" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: ‘আঙ্কল টমস কেবিন’, মার্কিন লেখক হ্যারিয়েট বিচার স্টো’র লেখা অত্যন্ত মানবিক একটা উপন্যাস। আজকাল প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটা অনুবাদ করেছেন অসিত সরকার। ১৮৫২ সালে লেখা এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু- বর্বর দাসপ্রথা। গা শিউরে উঠতে থাকবে নিগ্রো দাসদের ওপর শ্বেতাঙ্গদের চালানো নির্যাতনের বর্ণনা পড়লে। দাসদের জীবনে পরিবার, সন্তান বলে কিছু ছিলো না তখন। যখন তখন সন্তানকে মা-বাবার কাছ থেকে অন্য কোথাও বিক্রি করা হতো। দাসদের মানুষ বলেই মনে করা হতো না, এমনকি একটা পশুর জীবনও দাসদের চেয়ে ভালো ছিলো। উপন্যাসের নায়ক টম নামে এক নিগ্রো দাস। স্ত্রী ক্লো ও দুই সন্তান নিয়ে সে শেলবি পরিবারের খুব আদরেই থাকছে। একই বাড়িতে এলিজা নামে আরেক দাসীও তার সন্তানকে নিয়ে বাস করে। টম চরিত্রটির মধ্যে অসামান্য মানবিকবোধ, ধৈর্যসহ নানা গুণের সমাহার ঘটেছে। ওই সময়কার দাসদের করুণ অবস্থা বোঝার জন্য উপন্যাসটা যথার্থ। শেলবি পরিবার আকণ্ঠ ঋণের দায়ে টম আর এলিজার শিশুপুত্র হ্যারিকে বিক্রি করেন অনিচ্ছা সত্ত্বেও। সন্তান হারাবার শোক সইতে না পেরে এলিজা হ্যারিকে নিয়ে পালিয়ে যায়, অন্য এক নিষ্ঠুর মনিবের বাড়িতে কাজ করা এলিজার স্বামী জর্জও পালিয়ে যায় কানাডার উদ্দেশ্যে। তবে সৌভাগ্যক্রমে টম অগাস্টিন ক্লেয়ার নামে দয়ালু ও শিক্ষিত ঘরে গিয়ে পড়লো। মনিবের একমাত্র কন্যা শিশু ইভার সাথে টমের অসাধারণ বন্ধুত্ব পাঠককে আলাদা জগতে নিয়ে যাবে। শিশু ইভা তার মানবিক হৃদয় দিয়ে জগতের সমস্ত মানুষকে সমান ভাবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইভা কঠিন এক অসুখে মারা যায় এবং এর পর পরই মনিব অগাস্টিনও দুর্ঘটনায় মারা যায়। মনিব অগাস্টিন তার প্রয়াত কন্যা ইভার ইচ্ছা অনুযায়ী টমকে স্বাধীন করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন, কিন্তু অকাল মৃত্যুর ফলে টমের স্বাধীনতার সাধ মিটে যায়। নিলামে তোলার পর টম সাইমন লেগ্রি নামে প্রচণ্ড নিষ্ঠুর এক মনিবের হাতে পড়ে এবং এখানেই নির্যাতনের ফলে সে মারা যায়।