ফরিদ সাহেব জীবনের শেষ অফিস করে এসেছেন। হাতে নতুন ঘড়ি, সাথে উপহারের কয়েকটি প্যাকেট। প্যাকেটগুলো রঙিন কাগজে মোড়ানো। পায়ের কাছে আরো কয়েকটি বাক্স, একটি ছাতা। রিকশা গন্ত্যবের দিকে যাচ্ছে। ফরিদ সাহেব জীবনে প্রথম অফিস করার ¯মৃতি হাতড়াচ্ছেন। বিদায়ের মতো সে রকম কোনো আয়োজন ছিল না। প্রথম যখন বসের রুমে প্রবেশ করলেন তখন ফরিদের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ফরিদ সাহেব, আমাদের অফিসে আপনাকে স্বাগত। আশা করি আপনি সততা ও নিষ্ঠার সহিত আপনার দায়িত্ব পালন করবেন।’ বিদায়ের সময় বস সে কথারই যেন পুনরাবৃত্তি করলেন, ‘ফরিদ সাহেব, কাজের প্রতি আপনার সততা ও নিষ্ঠা আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। রিকশাওয়ালার কথায় সেই স্মৃতির জাল ছিন্ন হলো। ‘চাচা, রামপুরা আইসা গেছি, আপনি কোথায় নামবেন?’ ফরিদ যেন সংবিৎ ফিরে পেলেন। ‘সামনে গলির মুখে নেমে যামু। রিকশা জায়গামতো এসে ব্রেক করল। নামতে একটু কষ্ট হচ্ছে ফরিদ সাহেবের। মনে হচ্ছে আর কতক্ষণ যদি রিকশাটা চলত। স্মৃতি রোমান্থন করতে ভালোই লাগছিল। অফিস থেকে এটাই শেষ যাতায়াত। ভাড়া চুকিয়ে উপহারগুলো দুই হাত ভরে নিয়ে বাসার গন্ত্যবে চললেন। উপহারগুলো আনন্দ থেকে বেদনাই বেশি দিচ্ছে। চোখটা ছলছল করে উঠল। নিজেকে সামলে কলিং বেল টিপলেন। স্ত্রী গেট খুলেই চমকে উঠলেন, একি, তোমার কাছে এত বাক্স কীসের!