CEO হয়ে একটা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনের মধ্যে আছে আর্থিক সফলতা, পরিবার পরিজনের উন্নত জীবন ও শিক্ষার সুযোগ, সামাজিক সন্মান, মানসিক পরিতৃপ্তি ও দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ। দুঃখের বিষয় আমাদের শিক্ষিত চৌকস ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরি পেতেই বহু কিলোমিটার পথ হেটে ফেলে। কেউ পায়, কেউ থাকে প্রত্যাশায়। যারা পায় তারা পেশাজীবনের একটা যায়গায় এসে আটকে যায়। বাংলাদেশে এখন শিল্পায়ন ঊর্ধ্বমুখী। ১০০ টা ইকোনোমিক জোন তৈরি হচ্ছে যেখানে দেশী বিদেশী কোম্পানি উৎপাদন, বিক্রয়, বিপণন ও এক্সপোর্ট শুরু করবে। ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন সহ অনেক দেশের CEO ‘রা চাকরি করে এদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই টাকা পাওয়ার কথা আমাদের দেশের ছেলে মেয়েদের। এটা তাদের অধিকার। কিন্তু বিশেষ কিছু যোগ্যতার অভাবে তাঁরা আজ নিজেদের তৈরি করা সুযোগের সিংহভাগ থেকে বঞ্চিত। আমার দীর্ঘ পেশাজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি চেষ্টা করেছি আমাদের ছেলে মেয়েদের জন্য এই বইটা লিখতে যেখানে CEO হওয়ার ধারণা দেওয়া হয়েছে। আমি আশা করি এই বইটা অনুসরণ করলে আমাদের ছেলে মেয়েরা তাদের স্বপ্নের যায়গায় পৌঁছুতে পারবে।
লেখক পরিচিতিঃ "মানবিক বিভাগের ছাত্র হয়ে মাল্টিন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফাইজারে চাকরি নেওয়া ছিল স্বপ্নাতীত। সন্ধ্যায় বই নিয়ে বসেছি আর সকালে জানালা দিয়ে সূর্য্য উঠা দেখেছি।" কঠিন বিষয় ও টার্মিনোলোজি রপ্ত করে পরদিন ট্রেনিংএ উপস্থিত হতে হয়েছে। প্রতিদিন ছিল ট্রেনিং থেকে বাদ পড়ার উৎকণ্ঠা। ধনুক ভাঙা পণ করে সাধনায় বসেছিলাম বুদ্ধদেবীয় সংকল্পে। আমার সোনার হরিণ চাই। চাকরি জীবনে প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট রেখে ক্যারিয়ার-এ ন্যাশনাল সেলস মার্কেটিং টিমের দায়িত্ব নেওয়া ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা। নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে রানার মোটোর্স্ এ যোগদান। "How come a pharma guy in Automobiles Sales Marketing ?" আমার জয়েনিং-এর পর ফ্যাক্টরী ভিসিট-এ দিল্লী গেলে ভলভো-আইশার-এর ইঞ্জিনিয়ারের মন্তব্ব্যে আবার জিদে আগুণ লাগে চ্যালেঞ্জের দ্বিতীয় ধাপ অতিক্রম করার। রানার মোটরসের সাফল্যের ৭ বৎসর পর ডিরেক্টর মার্কেটিং এন্ড সেলস-এর পদ থেকে অবসর নিয়ে আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজ-এর এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর, মার্কেটিং এন্ড সেলস হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ছিল আমার পেশা জীবনের তৃতীয় চ্যালেঞ্জ। মানবিক বিষয়ে পড়ে তিন ধরণের ইন্ডাষ্ট্রিতে টেকনিক্যাল বিষয়ের বুৎপত্তি অর্জন ও উন্নতির শীর্ষে ওঠা আমার নিজেরই গল্পের প্রতিচ্ছবি যেন এ বইতে। ভিন্ন বিষয়ের ছাত্র হয়েও সততা,নিরলস পরিশ্রম, বই পড়ে ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লক্ষ্যের দিকে একাগ্রতার সাথে পথ চলে এক্সেকিউটিভ থেকে এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর হওয়া ছিল জীবনের সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা। ৩৩ বৎসরের কর্মজীবনে একটা বিষয়ই শিখেছি যে, ইঞ্জনিয়ারিং ডাক্তারী সহ বিশেষ কিছু Highly Technical বিষয় ছাড়া যে কোনো বিষয়ে পড়াশুনা করে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো ইন্ডাষ্ট্রিতেই উন্নতির শীর্ষে উঠা অবশ্যই সম্ভব। Sharpener প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে দেশের যুব সমাজকে পেশা জীবনের পথ দেখানোর কাজে Soft Skills Training, Personal Mentoring on "How to become a CEO", ও Fourth Industrial Revolution নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। Sharpener-এ প্রফেশনাল ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নীতি-নৈতিকতা-আদর্শে মানুষকে ব্যাক্তিগত জীবন ও ক্যারিয়ারের সমন্বয় করে কিভাবে সত্যিকারের সুখী জীবন যাপন করা যায় তার উপর নিবিড় ভাবে নিয়মিত ট্রেনিং দিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় Executive to Executive Director বইটি লেখা। এর মধ্যে প্রতিফলিত আমার পেশা জীবনের শীর্ষে ওঠার শ্বাশত সূত্র যা চিরকাল মানুষকে পথ দেখায়ে যাবে। বাবা শরীফ আব্দুর রাজ্জাক ব্রিটিশের অধীনে চাকুরী করতেন কলকাতায়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করে এবং আলীয়া মাদ্রাসা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন। মা, রিজিয়া বেগম গৃহিনী। জন্ম মাগুরায়। পড়ালেখা ইংরেজি সাহিত্য ও ইসলামিক রিসার্চ এন্ড কম্পারেটিভ রিলিজিওন। ছেলে রাতুল ও মেয়ে মৌ দুইজনই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রী রিনা চাকরি না করে নিবিড় পরিচর্যায় সংসারটাকে পৃথিবীর স্বর্গে পরিণত করেছেন। দুইজন আদর্শ নাগরিকের গর্বিত জননী এবং এই তিন জনের টিমের সফল ম্যানেজার।