আমার কাছে কবিতা বলতে-‘অকাট্য সকল সত্য, হৃদয়ের কথা’, না চাইতেও ভালোবেসে আসে, যাতনা দেয়, কোন অদৃশ্য শক্তির কৌশলে দখল করে নেয় কবিতার খাতা। মূলত এই বইয়ে যা কিছু স্থান পেয়েছে সব কিছুই কাহিনী-কবিতা। হয়তো পাঠক তার ঐকান্তিক জীবনের সাথে মিল খুঁজে পাবেন, তবেই কবিতা বহমান স্রোতের মত বয়ে যাবে হৃদয়ের রক্তে। ‘অতনু’ এবং ‘অলকা’ এর প্রধান দু’টি চরিত্র। কাহিনীর সংবেশে তুলে আনা হয়েছে, তাদের পরিচয়, প্রথম দেখা, উড়ো চিঠির আদলে গড়ে ওঠা দিস্তার পর দিস্তা, প্রণয় উদ্বায়ী পাপ এবং প্রিয় হারানোর অনুতাপ। কাহিনীর ধারাবাহিকতায় ফুটে উঠেছে সুন্দরতম হৃদয়ের অধিকারী ‘সুদর্শন’ এর প্রতি কাহিনীকারের একমাত্রিক প্রেম, নির্জন শহরে একাকীত্বের দহনে বিপর্যস্ত সময়ে একমাত্র বন্ধু ‘অরণ্যের’ কাছে খোলা চিঠি। ব্যক্তি মানুষের ঊর্ধ্বে এক চিরায়ত সত্তা ‘সিদ্ধার্থের’ প্রতি শুদ্ধ হৃদয়ের আকুলতা। এছাড়াও স্থান পেয়েছে হৃদয় মন্দির থেকে উৎসারিত আরো কিছু ভালোবাসার কবিতা। এই বইটি নিয়ে যতটুকু বলা যায় সেটা হলো- ‘দর্শন পড়ে কেউ নামেনা কবিতার মিছিলে। ‘সুদর্শন’, হতে পারে যে কোনো নাম, কিংবা ‘অতনুর বাণ’-মামুলি পৌরাণিক কাহিনী। এতে ঘোচেনা অনন্ত হৃদয়ের ব্যবধান! ফাগুন এলে শিমুলের বনে লাগে আগুন, আর কুয়াশার রাত্তিরে গহীন অরণ্যে সহসাই এসে যায় পত্র ঝরার মৌসুম। সমুদ্রের জলে বেড়ে যায় লবণ ক্রমাগত, আকাশ-সুনীলে প্রণয়ের প্রতিশ্রুতি রাখে না ‘সত্য’! বন্ধুর হয়ে যায় যত পথ যাহা ছিল অনাদিকাল অনিরুদ্ধ। 'সিদ্ধার্থ' ছাড়া নির্বাণ লাভে কেউ কোথাও থাকেনি কখনো।’