মানুষ জিনগতভাবেই হিংস্র, হত্যাপ্রবণ এবং আধিপত্যবাদী। লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে মানুষের আরো অনেক প্রজাতি বসবাস করতো।প্রকৃতির উপর একশোয় একশো আধিপত্য বিস্তারের জন্য যা যা করার, সবটাই আমরা করেছি সুচারুভাবে। মাইলকে মাইল বন পুড়িয়ে দিয়েছি খোশখেয়ালে; যে অঞ্চলেই পাড়ি জমিয়েছি, বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছিÑসে অঞ্চলের আদি বাসিন্দা, অধিকাংশ জীবকূলকে। অথচ, একটা বাঘ, একটা হাতির সাথে আমাদের প্রাগৈতিহাসিক পূর্বসূরিদের তেমন কোনো পার্থক্য ছিল না। আস্তে আস্তে আমরা মানুষ হয়ে উঠলাম। আমরা যতই মানুষ হই, প্রকৃতির সাথে আমাদের বন্ধন ততই ছিন্ন হতে থাকে; পারিপার্শ্বিক জগতের সাথে বিরাজমান ঐক্যতানে চিড় ধরতে শুরু করে। এরপর ঘটে বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব, ঘটে যায় আরো অনেক কিছু। প্রাচীন আগ্রাসী মনোবৃত্তি নিয়েই আমরা গড়ে তুলি সভ্যতা। চারপাশের অভূতপূর্ব সব পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিক ‘সভ্য’ আমরা বরণ করে নিয়েছি বিষণ্নতা, একাকিত্ব এবং অপরিমিত মনস্তাত্ত্বিক চাপ। ঘটনাক্রমে হত্যাপ্রবণ আমরা হয়ে উঠলাম আত্মহত্যাপ্রবণ। মোদ্দা কথা, শুরু থেকেই আধিপত্যবাদী আমরা কখনোই ভাবতে শিখিনিÑ‘উই অল আর ওয়ান’! তাই ভুগছি, ভুগব আরো। লক্ষ বছর পার হবে, এই দুষ্ট প্রজাতির শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যাবে একদিন। পৃথিবীটা অপেক্ষায় থাকবে, নতুন কারো জন্য; অপেক্ষায় থাকবে মৃত্যুর জন্য। অন্য কারো হাত ধরে, অন্যকিছুর মারফতে। শেষ রক্ষা অবশ্য কারোরই নেই; তোমার, আমার, না পৃথিবীর। রক্ষা নেই মহাবিশ্বেরও। মহাকাল মহাপ্রয়াণের অপেক্ষায়। ধ্বংস যে বড্ড অনিবার্য!
কামরুল হাসান সজীব স্বভাবগতভাবেই কবি। তার জন্ম, বেড়ে ওঠা— সবই মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরে । প্রয়াত শাহজাহান দেওয়ান এবং হাজেরা বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান তিনি । বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। পেশাগত জীবনের বাইরে লেখালেখিতে কিছুটা, আর বাকিটা সময় ব্যয় করেন শৈলমালায়। পর্বতারোহণ ব্যাপারটা তার জীবনে তুমুল একটা ছাপ ফেলে গেছে। ভালোবাসেন পথ হারিয়ে বনপাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে, সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে নিবিড়ভাবে মিশে যেতে। এছাড়া তার অন্যতম পছন্দনীয় কাজ, মানুষের গভীরে প্রবেশ করে তাদের জীবনদর্শন পাঠ করা।