সিএ জীবনের গল্প বইটিতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট লিটনের জীনের গল্প পনেরোটি পর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে তার ছেলেবেলা থেকে শুরু করে পেশাগত ডিগ্রী তথা চার্টার্ড তথা চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্সি (সিএ) ডিগ্রি অর্জন করা পর্যন্ত শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপ বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। মূলত এখানে তার শিক্ষাজীবনের প্রতি বেশি আলোকপাত করা হয়েছে। লিটনের বুদ্ধিমতী ও দূরদর্শী মা কিভাবে তার শিশুমনে বড় স্বপ্ন দেখার বীজ বপন করেছিলেন এবং একটা অশিক্ষিত সমাজে কীভাবে তাকে শাসন করে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করেছিলেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। লিটনের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তার বাবার সাহসী সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে তার বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে। লেভেল পাস নিয়মের সময় যেখানে বছরের পর বছর স্টুডেন্টরা সিএ পরীক্ষায় ফেল করতো সেখানে লিটন কোনো লেভেলে একবারও ফেল না করে প্রথম সুযোগেই কীভাবে সিএ পরীক্ষার তিনটি লেভেল পাস করার অনন্য কীর্তি গড়ল চারটি পর্বে তার বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। এই পর্বগুলো পড়লে একজন সিএ স্টুডেন্ট তার সিএ পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা পেয়ে যাবে। এমনকি পরীক্ষার হলে কীভাবে চাপ সামলাতে হবে এবং কোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দিতে হবে সেই বর্ণনাও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। লিটন এক চান্সে সিএ পরীক্ষার সবগুলো লেভেল পাস করে তার মনের মনিকোঠায় লালিত পরম আকাক্সিক্ষত স্বপ্ন বা চাওয়াটি পূরণ হওয়ায় এত বেশি পরিমাণে খুশি হলো যে তার জীবনের প্রথম লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার আক্ষেপ তার মন থেকে একেবারে ধুয়ে-মুছে নিঃশেষ হয়ে গেলো। লিটনের সঙ্গে যারা সিএ পাস করলো তাদের অধিকাংশই ইতোমধ্যে সিএ ইনস্টিটিউটে আবেদন করে এনরোলমেন্ট নম্বরসহ অ্যাসোসিয়েট মেম্বারশিপ পেয়ে গেল। এমনকি লিটনের পরের সেশনে যারা সিএ পাস করলো তারাও লিটনের আগে সিএ ইনস্টিটিউটের মেম্বার হয়ে নিজেদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে সবার কাছে উপস্থাপন করতে লাগলো। আর লিটনকে ২০০৯ সালের ৬ই অক্টোবর পর্যন্ত তার সিএ কোর্স সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। ২০০৯ সালের ৭ই অক্টোবর সিএ কোর্স কমপ্লিশন সার্টিফিকেট, তিন লেভেলে পরীক্ষা পাসের ডকুমেন্ট এবং অন্যান্য আরও কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঙ্গে নির্দিষ্ট ফিস জমা দিয়ে লিটন সিএ ইনস্টিটিউটে মেম্বারশিপের জন্য আবেদন করলো। অল্পদিনের মধ্যেই সিএ ইনস্টিটিউট থেকে লিটন এনরোলমেন্ট নম্বরসহ তার কাক্সিক্ষত মেম্বারশিপের চিঠি হাতে পেল। লিটন তার প্রিয় সিএ ফার্মে ম্যানেজার হিসাবে যোগদান করে কর্মজীবন শুরু করলো এবং তার ভিজিটিং কার্ডে অ্যাসোসিয়েট চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (এসিএ) ব্যবহার করা শুরু করলো।
দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা যশোরের অভয়নগর থানার অন্তর্গত মথুরাপুর গ্রামে আব্দুল্লাহ আল মামুনের পৈতৃক নিবাস। ছবির মতো সুন্দর এই গ্রামেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাজীবনের সকল পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেছেন। অদম্য মেধাবী মামুন ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে যথাক্রমে বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে সিএ সম্পন্ন করেন। প্রথম সুযোগেই সিএ পরীক্ষার সবগুলো লেভেল পাস করার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিএ সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে অর্জন করেন আইসিএবি'র ফেলো মেম্বারশিপ। বর্তমানে মামুন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সিএ ফার্ম একনাবিন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসে ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। বিচারক সহধর্মিণী, দুই সন্তান মানহা ও মাহাদ এবং মা-বাবার সঙ্গে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। কর্মজীবনের অসম্ভব ব্যস্ততার পাশাপাশি লেখালেখিতেও সিদ্ধহস্ত মামুন। ইতোমধ্যে তাঁর লেখা সিএ জীবনের গল্প এবং সিএ কেন পড়ব নামক বই দুটি সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণির পাঠকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এছাড়াও, প্রকাশিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মনের ডায়েরি শিরোনামে তাঁর লেখা আরও দুটি গ্রন্থ। অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সিএ কীভাবে পড়ব মামুনের লেখা পঞ্চম বই।