মানিকনগর প্রায় এসেই পড়েছে সুদীপার রিকশা। ক্লান্ত শরীর নিয়ে যেন আর খাটতে ইচ্ছে হচ্ছে না। মা'কে বারবার বলেছিলাম রিকশা না নিয়ে যেন বাস নেয়া হয়। তিনজন বড় মানুষ এক রিকশায় আটাআটি করে বসতে ভীষণ কষ্ট হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা! সেই কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রাস্তায় ঝাঁকুনি খেয়ে খেয়ে শরীরের অর্ধেক অংশ ব্যথায় টনটন করছে। চৈত্রের খাড়া রোদে গাঁ পুড়ে যাচ্ছে। একদিকে সায়ন্তী তার শরীরের পুরো ভার সুদীপার উপর দিয়ে রিকশার ওপরে বসে আছে। আজ তিনদিন যাবৎ তনিমার মা সুদীপাকে কল করে যাচ্ছে তো যাচ্ছে। যেদিন তনিমা আর তার মা পড়া বাদ দিয়ে ঘুরতে যায় সেদিন তো কিছুই হচ্ছে না বা হয়নি এমন ভাব তাদের। আর এখন যেই না হোম টিউটর নিজের দরকারে ছুটি নিল তখনই তাদের মেয়ের পড়া ভেস্তে গেল। তনিমার জন্যই এতো তড়িঘড়ি করে সুদীপাকে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। নয়তো আর কয়টা দিন গ্রামের বাড়ি ঘুরে বেড়াতে পারলে কিন্তু মন্দ হতো না। সব ঘুরাফেরা বাদ দিয়ে শহরের যান্ত্রিক জীবন মাঝে মাঝে মন বিষিয়ে তোলে। তখন আর কিছুই ভালো লাগে না। অনেকটা মন খারাপ নিয়ে সুদীপা তনিমাদের ডুপ্লেক্স বাড়ির বামপাশের কোনার দিকে কাঠের সিঁড়িটা দিয়ে উপরের তলায় আসল।