সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ রয়েছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের এমন মানুষের কাছে ওমর খৈয়াম তাঁর মৃত্যুর এক হাজার বছরও পরও জনপ্রিয়। বিশ্বে সকল প্রধান ভাষায় ভাষায় তাঁর ‘রুবাইয়াৎ’ অনূদিত হয়েছে এবং সাহিত্যামোদীরা কিছু কিছু ‘রুবাই’ মুখে মুখে উচ্চারণ করেন। ওমর খৈয়ামের ‘রুবাইয়াৎ’ বিশ্ব সাহিত্যে বিরল সৃষ্টি। খৈয়াম মহান গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ করলেও বিশ্বখ্যাতি পেয়েছেন শুধু কবি হিসেবে। অথচ তাঁর জীবদ্দশায় কেউ তাঁর ‘রুবাই’ এর কথা কেউ জানত না। এগুলো তিনি কখনো প্রকাশ করেননি। তাঁর মৃত্যুর কয়েকশো বছর পর এগুলো আবিষ্কৃত হলেও প্রথম দিকে তাঁর রুবাই পারস্যেও সামান্য মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আরও কয়েকশো বছর পর ১৮৫৯ সালে অ্যাডওয়ার্ড জে ফিটজেরাল্ড খৈয়ামের রুবাইয়াৎ ইংরেজিতে অনুবাদ করার পর খৈয়াম প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাঁর ‘রুবাই’ পাঠ, আলোচনা ও গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়। একক কাব্যগ্রন্থ হিসেবে তাঁর ‘রুবাইয়াৎ’ বিশ্বে সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। ফিটজেরাল্ড রুবাইগুলোর আক্ষরিক অনুবাদ না করে এগুলোকে ভিক্টোরিয় রোমান্টিসিজমে সিক্ত করেছেন। পরবর্তীতে অনেকে রুবাইগুলোর আক্ষরিক অনুবাদ করেছেন। যেভাবেই অনুবাদ করা হোক না কেন, রুবাইয়ের কথার গভীরতা পাঠকের মর্ম স্পর্শ করে, পাঠককে বাস্তব জগৎ থেকে আধ্যাত্মিক জগতে নিয়ে যায়, নিজেকে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে; খৈয়ামের ‘রুবাই’ এর সাফল্য সেখানেই।